
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব কি না এই প্রশ্নে প্রেসিডেন্টের দায়মুক্তির বিষয়টি উত্থাপন করায় সংবাদমাধ্যমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বুধবার হোয়াইট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে লেভিটের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড।
তিনি অভিযোগ করেন, ওবামা ও তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তারা ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রমাণ তৈরি করেছিলেন, যাতে মনে হয় রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পছন্দ করতেন।যদিও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে, রাশিয়া ওই নির্বাচনে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছিল।
গ্যাবার্ড বলেন, নির্বাচনে প্রভাব রাখার যে অভিযোগ, তা 'ওবামার প্রশাসনের বানানো।' গ্যাবার্ড অতীতে ওবামাকে "রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্রে" যুক্ত থাকার অভিযোগ করেছিলেন। একই অভিযোগ এই সপ্তাহে ট্রাম্পও করেছেন, তিনি ওবামাকে 'রাষ্ট্রদ্রোহী' বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বুধবার দ্য ডেইলি কলার-এর রিপোর্টার রেগান রিস লেভিটকে প্রশ্ন করেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্সিয়াল ইমিউনিটির (রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি) রায় অনুযায়ী কি ট্রাম্পের ওবামাকে বিচারের মুখোমুখি করার ইচ্ছা আইনগতভাবে সম্ভব নয়? লেভিট এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে মিডিয়ার সমালোচনায় মেতে ওঠেন।
২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, কোনো প্রেসিডেন্ট তাঁর দায়িত্ব পালনের সময় করা কর্মকাণ্ডের জন্য সম্পূর্ণ দায়মুক্তি পাবেন এই রায় ট্রাম্পের জন্য ছিল বড় এক আইনি জয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লেভিট বলেন, 'আমি প্রেসিডেন্টের এই বিষয়ে ভাবনার কথা বলতে পারি। তিনি গতকাল আপনাদের সবার সঙ্গে ওভাল অফিসে কথা বলেছেন। আজ সকালেও আমি তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি চান, যারা আমাদের দেশের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, তাদের যেন সম্পূর্ণ তদন্ত করে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়। এটা তো একদিনের নয়-পুরো দশ বছর ধরে চলছে।
আমি শুধু এটাই বলব-ডিরেক্টর যেসব তথ্য প্রকাশ করেছেন, এই কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সেসব খতিয়ে দেখা উচিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা হয়নি।' তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন প্রধান সংবাদমাধ্যম ওবামা প্রশাসনের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছে, অথচ তারা ডেমোক্রেটদের করা ট্রাম্প-বিরোধী অভিযোগগুলো যথাযথভাবে যাচাই করেনি।
লেভিট বলেন, 'এই শহরের প্রধান ডেমোক্রেট নেতারা- যেমন অ্যাডাম শিফ, হিলারি ক্লিনটন, এলিজাবেথ ওয়ারেন- টেলিভিশনে এসে আমেরিকান জনগণকে বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সম্পদ। এটা ছিল মিথ্যা। তারা সব সময়ই এটা জানত। হিলারি ক্লিনটন নিজেই বলেছিলেন, ট্রাম্প হবেন পুতিনের ‘পাপেট’। সেই সময় সিনেটর টিম কেইন বলেছিলেন, ট্রাম্প হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে ‘ডিফেন্স অ্যাটর্নি।
তিনি সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, এই কক্ষে উপস্থিত যথেষ্ট সাংবাদিক বা দেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অ্যাডাম শিফকে জিজ্ঞাসা করেননি: ‘আপনি কী বলছেন? আপনার কী প্রমাণ আছে?’ সবাই শুধু এই মিথ্যার পেছনে দৌড়াচ্ছে। আর তার ফল ছিল অভিশংসন, দেশের বিভাজন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: