চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনা কূটনীতিকদের সঙ্গে ‘খোলামেলা’ আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায় বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চীনা কূটনীতিকদের সঙ্গে দেশের কর্মকর্তাদের ‘খোলামেলা এবং ফলপ্রসূ আলোচনা’ হয়েছে। বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো। ৬ জুন, মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ক সহকারী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড্যানিয়েল ক্রিটেনব্রিংক এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র ডিরেক্টর ফর চায়না সারাহ বেরান সোমবার বেইজিংয়ে চীনা কর্মকর্তা মা ঝাওসু এবং ইয়াং তাও-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
তীব্র প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও মধ্য-স্তরের এই আলোচনা দুই দেশের মধ্যে অব্যাহত কূটনৈতিক কার্যক্রমকে সামনে এনেছে। এছাড়া এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন দিন দু’য়েক আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক জাহাজের কাছে ‘অনিরাপদ’ চলাচলের জন্য চীনকে অভিযুক্ত করেছে।
সোমবারের বৈঠকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলে, ‘উন্মুক্ত যোগাযোগের সুযোগ বজায় রাখার এবং দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উচ্চ-স্তরের কূটনীতি গড়ে তোলার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে উভয় পক্ষের মধ্যে খোলামেলা এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’
গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) এর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস গত মাসে চীন সফরের পর এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, দুই পক্ষ সোমবার তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, তাদের ‘যোগাযোগের চ্যানেল’ এবং অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় করেছে। আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে আমেরিকান কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ওয়াশিংটন ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এবং মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াবে’।
অবশ্য কয়েকদিন আগে তাইওয়ান প্রণালীতে বিপজ্জনকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজের কাছে চলে এসেছিল চীনা যুদ্ধজাহাজ। এই ঘটনায় উভয় দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
মূলত চীন-তাইওয়ানের মধ্যবর্তী তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী জাহাজ ইউএসএস চুং-হুন। আর এমন সময়ই জাহাজটির ৪৫০ ফুটের মধ্যে চলে আসে চীনের ওই যুদ্ধাজাহাজটি।
সেনাবাহিনীর ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড গত শনিবার জানায়, একটি চীনা জাহাজ আমেরিকান ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস চুং-হুনের কাছাকাছি এসেছিল। আন্তর্জাতিক জলসীমায় তাদের নিরাপদে চলাচলের অধিকার থাকলেও চীন তা লঙ্ঘন করে এবং সংঘর্ষ এড়াতে ডেস্ট্রয়ারের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়।
তবে সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এই ঘটনার বিবরণ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং প্রথমে ‘উস্কানি’ সৃষ্টির জন্য আমেরিকান ডেস্ট্রয়ারকে অভিযুক্ত করেন। এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নজরদারি বিমানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল চীনের একটি যুদ্ধবিমান।
সূত্র : আল-জাজিরা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: