অনলাইন সার্চে গুগলের একচেটিয়া দখল অবৈধ: আমেরিকান বিচারক

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৬ আগস্ট ২০২৪ ১৭:৪৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

প্রতিযোগিতা দমন করতে এবং অনলাইন অনুসন্ধান আর এ–সম্পর্কিত বিজ্ঞাপনে একচেটিয়া অধিপত্য বজায় রাখতে গুগল বেআইনিভাবে কাজ করছে বলে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিচারক। ৫ আগস্ট সোমবার এই রায় আসে। রায়টি গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের জন্য দারুণ এক ধাক্কা। কারণ, এই রায়ের পর প্রযুক্তি খাতের বৃহৎ এই কোম্পানিটিকে তাদের ব্যবসা নীতিতে পরিবর্তন আনতে হতে পারে।

অনলাইন সার্চ মার্কেটের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে গুগল, এই অভিযোগে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিভাগ গুগলের বিরুদ্ধে মামলাটি করে।

প্রতিযোগিতা আরও বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ (ফেডারেল ট্রেড কমিশন) প্রযুক্তি খাতের বড় বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে।

সোমবারের মামলাটির রায় এসেছে, সেটিকে গুগল এবং এর মালিকদের জন্য অস্তিত্বের হুমকি বলে বর্ণনা করা হচ্ছিল।

এই রায়ের ফলে গুগল ও অ্যালফাবেটকে কী কী সাজার মুখে পড়তে হবে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরবর্তী শুনানিতে তাদের জরিমানা বা অন্যান্য প্রতিকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

সরকার তাদের আবেদনে গুগলের ‘স্ট্রাকচারাল রিলিফ’ চেয়েছে। অন্তত, তাত্ত্বিকভাবে এর অর্থ দাঁড়াতে পারে যে কোম্পানিটি ভাগ ভাগ করে ফেলা।

নিজের আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা বিচারক অমিত মেহতা বলেন, স্মার্টফোন ও ব্রাউজারে ‘ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন’ হওয়া নিশ্চিত করতে গুগল লাখো কোটি ডলার খরচ করে।

বিচারক মেহতা তাঁর ২৭৭ পাতার উপদেশে আরও বলেন, ‘গুগল একচেটিয়া এবং একচেটিয়াবাদের রক্ষক হিসেবে কাজ করেছে।’

এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে অ্যালফাবেট।

কোম্পানির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই আদেশ এই স্বীকৃতি দিয়েছে যে গুগল গ্রাহকদের জন্য সেরা সার্চ ইঞ্জিন। তবে শেষ পর্যন্ত রায়ে এটা বলা হয়েছে, আমাদের এটির সহজলভ্য করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।’

ওয়াশিংটন ডিসিতে ১০ সপ্তাহ শুনানি শেষে গতকাল ওই রায় দেওয়া হয়। শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেন, গুগল অ্যাপল, স্যামসাং, মোজিলা এবং অন্যান্য কোম্পানিকে তাদের প্ল্যাটফর্মে গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে ‘ডিফল্ট’ হিসেবে আগেই বসানোর জন্য প্রতি বছর লাখো কোটি ডলার খরচ করে।

গুগল এটা করে বলেই অন্যান্য কোম্পানি অর্থবহ প্রতিযোগিতা করার সুযোগ এবং সম্পদ পায় না বলেও যুক্তি উপস্থাপন করেন কৌঁসুলিরা।

অ্যালফাবেটের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎসগুলোর একটি গুগল সার্চ ইঞ্জিন।

নিজেদের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে গুগলের আইনজীবীরা বলেন, গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে কার্যকর মনে করে বলেই গ্রাহকরা এটির প্রতি আকৃষ্ট হয়। গুগল গ্রাহকদের জন্য তাদের সার্চ ইঞ্জিন আরও ভালো করতে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।

গুগলের আইনজীবী জন শ্মিটলিন এ বছরের শুরুতে এক শুনানিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘গুগল জিতছে; কারণ, এটি সেরা।’

গুগলের বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি নিয়েও মামলা হয়েছে। যে মামলার বিচার কাজ আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ইউরোপেও একক আধিপত্য–সংক্রান্ত মামলায় গুগলকে কোটি কোটি ডলার জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: