জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। বিশ্বজুড়েই এর রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। তবে সামাজিক সম্প্রীতিতে ভাঙন এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে নানা সমালোচনা রয়েছে টিকটকের বিরুদ্ধে। এর জেরে অনেক দেশেই নিষিদ্ধ হয়েছে সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেয়ারিং এই অ্যাপ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার টিকটক নিষিদ্ধে কংগ্রেসে পাস হলো একটি বিল। বুধবার (১৩ মার্চ) পাস হওয়া এই বিলের ফলে দেশটিতে নিষিদ্ধ হতে পারে অ্যাপটি।
আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যম জানায়, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে বিপুল ভোটে বিলটি পাস হয়। এখন দরকার সিনেটের অনুমোদন। পরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সই করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকটকের ওপর চীনের প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা উদ্বিগ্ন। কারণ এটির মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স বেইজিংভিত্তিক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়, কারণ প্রতিষ্ঠানটি চীনের কর্মকর্তাদের কাছে ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিলটি উত্থাপনকারীদের মধ্যে অন্যতম রিপাবলিকান সদস্য মাইক গ্যালেগার। তিনি বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রণ করে কিংবা তাদের মালিকানাধীন এমন কোনো প্রভাবশালী সংবাদ প্ল্যাটফরমের বিষয়ে ঝুঁকি নেবে না আমেরিকা।
এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাসের কিছুক্ষণ পর এক ভিডিওবার্তায় বাইটড্যান্সের শীর্ষ নির্বাহী শৌ জি চিউ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে— তা দেশটির অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
টিকটক নিষিদ্ধের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক বিবৃতিতে বলেন, টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে— এমন কোনো প্রমাণ দেশটির সরকার দেখাতে পারেনি। তারপরও এই অ্যাপটি নিষিদ্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ওয়াশিংটন।
গেল জানুয়ারিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি তদন্তে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক এবং চীনের বাইটড্যান্সের মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে ডাটা শেয়ার করার সিস্টেমটি ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ছিল। এর ফলে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্যও অরক্ষিত হয় পড়েছিল।
২০২১ সালে টিকটকের বিরুদ্ধে নাগরিকদের স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগ ওঠে। ওই বছরই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এই অ্যাপটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন। ২০২২ সালে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও একই আদেশ দেওয়া হয়। সেই পথেই এবার সাধারণ পর্যায়ে টিকটক ব্যবহার নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে ওয়াশিংটন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: