পূর্ব আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের গাড়িবহরে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন নিহত হয়েছে এবং তিনজনকে অপহরণ করা হয়েছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব নাইজেরিয়ার আনামব্রা প্রদেশের আতানি শহরের কাছে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মীদের বহনকারী গাড়িবহরে বন্দুক হামলায় চালানো হয়। বন্দুক হামলায় দুই কর্মচারী এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বন্দুকধারীরা তিনজনকে অপহরণ করে। নিহত চারজন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মী ও দুজন পুলিশ কর্মকর্তা। অপহৃত এই তিনজনের মধ্যে একজন ড্রাইভার এবং অন্য দুজন পুলিশ কর্মকর্তা।
আনামব্রা প্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা ইকেঙ্গা তোচুকউ জানান অপহৃতদের সন্ধান ও উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা পুলিশ মোবাইল ফোর্সের দুজন সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলেটের দুই কর্মীকে হত্যা করে এবং তাদের মরদেহ ও যানবাহন আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।’
তিনি ওই এলাকাটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতার জন্য পরিচিত উল্লেখ করে বলেন, দূতাবাসের গাড়িবহরটি ‘ওই এলাকায় পুলিশ বা কোনো নিরাপত্তা সংস্থার সহায়তা ছাড়াই সেখানে গিয়েছিল’।
তিনি আরও বলেন,হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে পৌঁছায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘটনাকে হামলা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ‘এটা দেখে মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কনভয়ের গাড়িতে হামলা হয়েছে’।
কিরবি বলেন, ‘আমি আপনাকে যা বলতে পারি তা হলো, সেখানে কোনো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিল না এবং তাই কোনো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতাহত হয়নি।’ তবে গাড়িবহরে হামলা ও হতাহতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ঘটনায় ‘তদন্তের জন্য নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিষেবার সঙ্গে কাজ করছে’ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক কর্মীরা।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ‘আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা সর্বদা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা দূতাবাসের বাইরে কোনো সফর আয়োজন করার সময় ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করি।’
সাম্প্রতিক সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ওই এলাকায় তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে। সাধারণত তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু পুলিশ সদস্য ও সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা।
নাইজেরিয়া কর্তৃপক্ষ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে সহিংসতার জন্য নিষিদ্ধঘোষিত ইনডিজেনাস পিপল অব বিয়াফ্রা মুভমেন্টকে (আইপিওবি) দায়ী করে আসছে। যদিও আইপিওবি বারবার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: