‘চীনের প্রভাব কাটাতে’ শ্রীলঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৯ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৪

কলম্বো বন্দরের ওয়েস্ট কন্টেইনার টার্মিনালে একটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ : সংগৃহীত ছবি কলম্বো বন্দরের ওয়েস্ট কন্টেইনার টার্মিনালে একটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ : সংগৃহীত ছবি


শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় আদানির মালিকানাধীন বন্দরে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিনিয়োগের পরিমাণও বেশ বড়। উদ্দেশ্য, শ্রীলঙ্কায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব কমানো। এমনটাই উঠে এসেছে টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন থেকে। আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরের ওয়েস্ট কনটেইনার টার্মিনালের একটি বড় অংশের মালিকানা আদানি গ্রুপের। গোষ্ঠীটির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড ওয়েস্ট কনটেইনার টার্মিনালের ৫১ শতাংশের মালিকানা ধারণ করে। ওয়েস্ট টার্মিনালের উন্নয়নকল্পে যুক্তরাষ্ট্র আদানির সেই টার্মিনালে ৫৫৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী স্কট নাথান কলম্বো সফরকালে এ ঘোষণা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী করণ আদানি বলেন, ‘খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ সুদে এটি একটি ২০ বছর মেয়াদি ঋণ।’ তবে প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১২০ কোটি ডলার। এটি দুই ধাপে বাস্তবায়িত হবে।

কলম্বো বন্দরের এই টার্মিনালের উন্নয়নকাজ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল একটি জাপানি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু দেশটির বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ না দেখানোয় পরে এটি ভারতের আদানি গ্রুপকে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, ভারত সরকার আদানি গ্রুপকে এই বন্দরের মালিকানা দেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারকে চাপ দিয়েছে। তবে আদানি গ্রুপ সব সময়ই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

স্কট নাথান বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা বিশ্বের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট হাব। বিশ্বের মোট কনটেইনারবাহী জাহাজের অর্ধেকই শ্রীলঙ্কার জলসীমা হয়ে চলাচল করে। ওয়েস্ট কনটেইনার টার্মিনালের উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতের ৫৫৩ মিলিয়ন ঋণ প্রতিশ্রুতি টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়াবে। শ্রীলঙ্কার জন্য বৃহত্তর সমৃদ্ধি বয়ে আনবে কোনো ধরনের বৈদেশিক ঋণের বোঝা না বাড়িয়েই। পাশাপাশি এই অঞ্চলে আমাদের মিত্রদের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।’

নাথানের এই মন্তব্যকে চীনের প্রতি একটি কড়া জবাব হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ শ্রীলঙ্কা বিগত বছরে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছিল। এ সময় দেশটি নিজেকে দেউলিয়া বলেও ঘোষণা করেছিল। দেশটির মোট বৈদেশিক ঋণের প্রায় অর্ধেকই চীন থেকে নেওয়া। এ ছাড়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর হাম্বানটোটাকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে চীন, যা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলেছিল।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: