আবারো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, তীব্র নিন্দা জানালেন ইউরোপীয় নেতারা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৬

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যের দুই অনলাইন প্রচারকর্মীসহ পাঁচ ইউরোপীয় নাগরিকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় নেতারা। যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির জ্যেষ্ঠ এমপি চি অনভুরাহ ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘বাক্‌স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রযুক্তিবিষয়ক সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান চি অনভুরাহ বলেন, ‘কারও বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে না পেরে তাঁকে নিষিদ্ধ করা সেই বাক্‌স্বাধীনতাকেই বাধাগ্রস্ত করে, যা রক্ষার দাবি করছে ট্রাম্প প্রশাসন।’

চি অনভুরাহ আরও বলেন, ডিজিটাল জগতে বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার কারণে অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে ইমরান আহমেদের মতো প্রচারকর্মীদের ভূমিকার প্রয়োজন রয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ভিসা না দেওয়ার এই ঘটনাকে ‘ভীতি প্রদর্শন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি–বিষয়ক প্রধান কাজা কালাস এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত’ বলে অভিহিত করেছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ওই পাঁচ ইউরোপীয় নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তাঁর অভিযোগ, ওই ব্যক্তিরা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোকে (যেমন এক্স, মেটা) চাপ দিয়ে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি দমনে কাজ করছেন।

মার্কো রুবিও বলেছেন, এই ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো বিশ্বজুড়ে একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে তুলেছে, যাদের কাজই হলো মানুষের কথা বলায় বাধা দেওয়া। তারা বিভিন্ন অজুহাতে ইন্টারনেটে মানুষের স্বাধীন মতামত প্রকাশ বন্ধ করতে চায়।

রুবিওর মতে, এই বিদেশি ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে (যেমন ফেসবুক, এক্স) চাপ দিয়ে নাগরিকদের বিভিন্ন পোস্ট বা মতামত সরিয়ে দিতে বাধ্য করছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বা খবরদারি করার শামিল। ট্রাম্প সরকারের নীতি হলো, তারা নিজের দেশের মানুষের স্বার্থকে সবার ওপরে রাখবে। তাই অন্য দেশের কেউ এসে যদি নাগরিকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেন, তবে সেটা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া ব্যক্তিরা হলেন যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেটের (সিসিডিএইচ) প্রধান ও লেবার পার্টির সাবেক উপদেষ্টা ইমরান আহমেদ, গ্লোবাল ডিজইনফরমেশন ইনডেক্সের (জিডিআই) প্রধান নির্বাহী ক্লেয়ার মেলফোর্ড, ইউরোপীয় কমিশনের সাবেক কমিশনার থিয়েরি ব্রেতোঁ, জার্মান সংস্থা হেটএইডের কর্মকর্তা আনা-লেনা ফন হোডেনবার্গ ও জোসেফিন ব্যালন।

ট্রাম্প প্রশাসন এসব ব্যক্তিকে ‘উগ্রপন্থী অধিকারকর্মী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।

ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যের সরকার বলেছে, বাক্‌স্বাধীনতা রক্ষায় তারা ‘পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভিসানীতি নির্ধারণের অধিকার থাকলেও আমরা ইন্টারনেটকে ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে মুক্ত রাখতে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন করি।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: