এবারের জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে গাজা ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রসঙ্গ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৫

ছবি :  সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত

জাতিসংঘের এ বছরের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রাধান্য পাবে গাজা ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রসঙ্গ। অনুষ্ঠিতব্য অধিবেশনে ১৪০টির বেশি রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করায় এবারের সম্মেলনে তিনি উপস্থিতি থাকতে পারবেন না। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।

এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজা উপত্যকায় প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরাইল। প্রায় দুই বছর যাবত উপত্যকায় হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে দেশটি। ফলে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। বলা হচ্ছে এবারের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে গাজা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গ আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। আগামী সোমবার থেকে সৌদি আরব এবং ফ্রান্সের যৌথ উদ্যেগে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। এর উদ্দেশ্য হলো পাশাপাশি অবস্থিত দুটি রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা।

গত সপ্তাহে সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে গৃহীত হয়েছে, যেখানে হামাসকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকের পর বেশ কিছু দেশ- বিশেষ করে ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ-এর বিশ্লেষক রিচার্ড গোয়ান একে একটি ‘প্রতীকী’ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, যদি স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলো ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানাতে ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, তবে এই পদক্ষেপের বাস্তব গুরুত্ব থাকবে।

গোয়ান ইসরাইলের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দ্বারা উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন। নেতানিয়াহু এই পরিষদে ভাষণ দেবেন। এক ভাষণে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার সময়ে ফিলিস্তিন নামক কোনো রাষ্ট্র গঠিত হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির বিরোধিতা করেছে, যার ফলে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদলের ভিসা আবেদন বাতিল করেছে দেশটি। তবে সম্মেলনে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের ভিডিও লিংকে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার এ বিষয়ে সাধারণ পরিষদে একটি ভোট হওয়ার কথা।

ডনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার বৈদেশিক সহায়তা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে, যা মানবিক সংকটকে তীব্র করেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।
গভীর আর্থিক সংকট এবং যুদ্ধ জর্জরিত পরিস্থিতিতে, জাতিসংঘ নীরবে তার ৮০তম বার্ষিকী পালন করছে এবং একইসঙ্গে তার কার্যকারিতা নিয়ে সমালোচনার মোকাবিলা করছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর অন্তর্বর্তীকালীন কার্যনির্বাহী পরিচালক ফেদেরিকো বোরেলো বলেছেন, বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা একটি অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, যখন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করছে বা তাতে সহযোগিতা করছে, তখন নিয়মগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

যেমনটি গাজা, ইউক্রেন এবং অন্যান্য স্থানে ঘটছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজা, ইউক্রেন, সুদান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মানুষ কাজ ও তার জবাব খুঁজছে, এমন কাজ যা আমাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর গুরুত্বের সঙ্গে মানানসই।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: