ইকুয়েডরে মোরগ লড়াইয়ের আসরে বন্দুক হামলা : নিহত ১২, গ্রেপ্তার ৪

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৪৭

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডর এখন রীতিমতো গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত। একটি মোরগ লড়াই চলার সময়ই বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। এ ঘটনায় গোটা দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হামলার পর শনিবার পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে, উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইকুয়েডরের পশ্চিমাঞ্চলের মানাবি প্রদেশের লা ভ্যালেন্সিয়া নামক গ্রামীণ এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সময় রাতে একটি জনাকীর্ণ মোরগ লড়াইয়ের আয়োজনে অংশ নিতে অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন। সেই সময়ে হঠাৎ করে কিছু বন্দুকধারী রিংয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।

ধারণা করা হচ্ছে, তাদের টার্গেট ছিল মাদক গ্যাংয়ের প্রতিপক্ষ সদস্যরা। হামলায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ১২ জন। মূলত মাদক চোরাচালানের রুট দখলে রাখতেই একের পর এক হামলা আর হত্যাকাণ্ড দেশটিকে অস্থির করে তুলছে। এবার সেই সহিংসতার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ল বিনোদনের আঙিনায়। সাধারণ মানুষ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সহিংসতা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছে।

হামলার সময় ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, বন্দুকধারীরা সেনা পোশাকে মোরগ লড়াইয়ের রিংয়ে প্রবেশ করে গুলি চালায় এবং দর্শকরা প্রাণভয়ে ছুটোছুটি করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এ হামলার পেছনে সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম বড় মাদক গ্যাং। প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপরাধ তদন্ত শুরু করেছে।

প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া জানিয়েছেন, ইকুয়েডর বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম মাদক ট্রানজিট হাব হয়ে উঠেছে-প্রায় ৭০ শতাংশ কোকেন এখানকার বন্দর হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পাচার হয়। প্রতিবেশী কলম্বিয়া ও পেরু, যারা কোকেন উৎপাদনে শীর্ষে, সেখান থেকেই এসব মাদক আসে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, ইকুয়েডরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গভীর সংকট রয়েছে এবং গ্যাং ও মাদকচক্রের দৌরাত্ম্য এখন বিনোদনের মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। শুধু চলতি বছরের জানুয়ারিতেই দেশটিতে ৭৮১টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যার বেশিরভাগই ছিল মাদক ব্যবসা ও গ্যাং বিরোধের ফসল। সাধারণ মানুষ এখন চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং পুরো নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে এখন একটাই দাবি—এই সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্রকে আরও দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: