লন্ডনে তুর্কি দূতাবাসে কোরআন পোড়ানোয় এক ব্যক্তিকে পিটুনি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৯

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে ঘোষণা দিয়ে কোরআন পোড়াতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে তিনি কোরআনে আগুন ধরিয়ে দিলে রাস্তা থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে তাঁকে তাড়া করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি দূতাবাসের সামনে একটি বইয়ে আগুন লাগান। সম্ভবত এই ঘটনা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। এই সময়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে তাঁর দিকে তেড়ে যান।

এই ঘটনার ভিডিও এক্স প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হুডি পরা এক ব্যক্তি তুর্কি দূতাবাসের নিরাপত্তা বেড়ার বাইরে দাঁড়িয়ে একটি বইয়ে আগুন দিচ্ছেন। তাঁর হাতেই বইটি জ্বলছিল। হঠাৎ এক ব্যক্তি ছুরি উঁচিয়ে তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। ওই ব্যক্ত দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। এরপর ছুরিধারী ব্যক্তি তাঁকে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকেন।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীকে আটক করে এবং আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তির একটি আঙুলে জখম ছাড়া তেমন কোনো আঘাত নেই। হামলাকারীর পরিচয় এবং হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে তদন্ত করছে পুলিশ।

তুর্কি দূতাবাস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে করা কোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডই সহিংসতার যৌক্তিকতা দেয় না। আমরা সব পক্ষকে শান্তি ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই।’

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করছি এবং শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ঘটনার ধারাবাহিক বর্ণনা পোস্ট করেছে। সেখানে আগের একটি পোস্টে কোরআন পোড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করা হয়। অ্যাকাউন্টধারী লিখেছিলেন: ‘ঘটনা ঘটতে আর ৪৫ মিনিট বাকি’। সঙ্গে একটি বই এবং আগুনের ইমোজি যোগ করা হয়।

পোস্টটির নিচে লেখা হয়, ’এটা করার দরকার নেই’। অন্যরা আবার আগুনের ইমোজি পোস্ট করে। অন্যরা তাদের বলে, ‘সাবধান থাকো গাইজ’।

এক্স–এ কেউ কেউ দাবি করেছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই নাকি ওই ব্যক্তি কোরআন পুড়িয়েছেন। কারণ তিনি দাবি করেছেন, তুরস্ককে ‘মৌলবাদী ইসলামপন্থীদের ঘাঁটি’ বানানো হচ্ছে।

পরে সেই ব্যক্তি পোস্ট করেছেন, ’আমি যখন কোরআন পোড়াচ্ছিলাম, তখন আমাকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করা হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশ আসে।’

এর আগে আগে তিনি বলেছিলেন, লন্ডনে যাচ্ছেন। সালওয়ান মোমিকার সম্মানে তিনি কোরআন পোড়াবেন। সেই পোস্টে সালওয়ান মোমিকার কোরআন পোড়ানো এবং পৃষ্ঠাগুলো টয়লেটে ফেলার ভিডিও পোস্ট করেন তিনি।

২০২৩ সালে স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ান সালওয়ান মোমিকা। গত জানুয়ারি তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: