হাইতিতে বেসামরিক ফ্লাইট নিষিদ্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪১

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

হাইতিতে সকল বেসামরিক ফ্লাইট এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি হাইতিতে একটি বিমান লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক বিমান সংস্থার তরফ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

গত সোমবার স্পিরিট এয়ারওয়েজের বিমানে গুলি লাগে। এ ঘটনার পর বিমানটিকে ঘুরিয়ে দ্রুত ডমিনিক্যান রিপাবলিকে নামানো হয়। এরপরেই যুক্তরাষ্ট্র হাইতিতে সকল বেসামরিক ফ্লাইট বাতিল করে দেয়। গুলি লাগার ফলে এক বিমান সেবিকা সামান্য আহত হন।

অনলাইনে পোস্ট করা ছবিতে প্লেনের ভিতরে বেশ কয়েকটি বুলেটের ছিদ্র দেখা গেছে।

তীব্র গ্যাং সহিংসতা চলছে হাইতিতে। তারমধ্যেই সম্প্রতি নির্বাচন হয়েছে সেখানে। নতুন প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্য এবং গ্যাং সহিংসতায় বিধ্বস্ত দেশের লাগাম টানা চেষ্টা করছেন।

প্রধানমন্ত্রী অ্যালিক্স দিদিয়ের ফিলস-আইম সোমবার শপথ নিয়েছেন এবং বিদায়ী প্রিমিয়ার গ্যারি কনিলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। দেশটির ৮০ শতাংশ এলাকাই এখন বিভিন্ন গ্যাংয়ের দখলে। তারই মধ্যে বিমানে গুলির ঘটনা পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক করে দিয়েছে।

মঙ্গলবার হাইতি বিশ্বের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। দেশটির প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায় এবং রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের শব্দ শোনা যায়।

সুসজ্জিত গ্যাংগুলোর আক্রমণের আশঙ্কায় গতকাল অনেক দোকান এবং স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী বহিরাগত হাইতির পুলিশকে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।

হাইতির রাজধানীতে গ্যাং সদস্যরা নিয়মিতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। সেখানে ডাকাতি, ধর্ষণ এবং অপহরণ ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার হাইতির নেতাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ একপাশে রেখে দেশে শান্তি ফেরানোর দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে জোভেনেল মোইসকে হত্যার পর থেকে হাইতির কোনো প্রেসিডেন্ট নেই।

ক্যারিবিয়ান দেশটি দীর্ঘকাল ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং গ্যাং সহিংসতার সঙ্গে লড়াই করেছে।

কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে যখন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো রাজধানীতে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে, তখন পরিস্থিতির তীব্র অবনতি হয়। জুন মাসে কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন সহায়তা মিশনের আগমন সত্ত্বেও সহিংসতা বেড়েই চলেছে সেখানে।

সাম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইতিতে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্রমাগত অপহরণ এবং নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতায় এক হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গ্যাং সদস্যরা কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন পুলিশ বাহিনীর মোকাবেলায় তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে, পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ড্রোন ব্যবহারসহ পরিখা খনন এবং অস্ত্র মজুদ করেছে। গ্যাং নেতারা তাদের নিয়ন্ত্রণ করা অঞ্চলগুলোর জন্যও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।

 

সূত্র: এএফপি

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: