ইরানে হামলা চালাতে ইসরায়েলকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার। সম্প্রতি ইরানের তেল স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় এই কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো বলছে, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো সামরিক আক্রমণের প্রেক্ষাপটে তারা নিজেদের আকাশসীমা ইসরায়েলকে ব্যবহার করতে দেবে না।
বেশ কিছুদিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তার মতে, ইরানকে এই হামলার ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টও বলেছেন, ইরানের ওপর প্রতিশোধ হবে ‘প্রাণঘাতী’ ও ‘অপ্রত্যাশিত’।
ইরান গত ১ অক্টোবর লেবাননে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর হত্যার প্রতিবাদে ইসরায়েলের দিকে ১৮১টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে। এই হামলার পর থেকেই উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরানের তেল স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা থেকে বিরত থাকতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলো। তাদের আশঙ্কা, যদি সংঘর্ষ বৃদ্ধি পায়, তাহলে ইরানের প্রক্সিগ্রুপগুলো এই দেশগুলোর তেল স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে। সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশগুলো এই সংঘর্ষে জড়াতে চায় না এবং তারা শান্তি বজায় রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সম্প্রতি রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, যেখানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাক্ষাৎ করেছেন। এর মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলো ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে, যাতে ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব তাদের অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে।
উপসাগরীয় দেশগুলোর এই কঠোর অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে এবং ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেলে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায়, তা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: