তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এমন এমন বর্বরতা দেখে হিটলারও ঈর্ষাবোধ করবে। ১১ মে, রোববার গ্রিসের কাথিমেরিনি পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোয়ান এ কথা বলেন। খবর আনাদোলু।
এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েল গত কয়েক মাস ধরে গাজার জনগণের ওপর যে অত্যাচার করছে, নিপীড়ন চালাচ্ছে সেগুলোকে কি কোনোভাবেই তেল আবিবের জন্য বৈধ ভাবা সম্ভব? হাসপাতালে বোমা ফেলা, শিশুদের হত্যা করা, বেসামরিক লোকদের ওপর নিপীড়ন চালানো, নিরপরাধ লোকদের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও ওষুধের অভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য কোনো কৈফিয়ত কি যথেষ্ট? অতীতে হিটলার কী করতেন? তিনি বন্দী শিবিরে লোকদের নিপীড়ন ও হত্যা করেছেন।
এরদোয়ান প্রশ্ন রাখেন, শুধু ৭ অক্টোবরের পরেই নয়, এর বহু বছর আগে থেকেই কি গাজাকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করা হয়নি? সেখানকার মানুষগুলো কি বছরের পর বছর ধরে অবরোধ করে রাখা হয়নি? গাজা বাসিন্দাদের সঙ্গে বন্দিশিবিরের বন্দির মতো আচরণ করা হয়নি? ৭ অক্টোবরের পর গাজায় সবচেয়ে নৃশংস ও পরিকল্পিত গণহত্যার জন্য কে দায়ী?
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজায় গণহত্যা চালিয়ে নেতানিয়াহু এমন একটি স্তরে পৌঁছে গেছেন, যা হিটলারকেও ঈর্ষান্বিত করে তুলবে। কারণ ইসরায়েল অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্যবস্তু করে, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে আঘাত করে, এমনকি সাহায্যকারী কনভয়গুলোতেও তারা গুলি চালায়।
তিনি বলেন, গাজার জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা, বিশেষ করে তাদের জীবনের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। ইসরায়েল সেখানে বেপরোয়াভাবে জাতিসংঘের রেজুলেশন, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। অথচ ১৯৬৭ সালের সীমানার মধ্যে রাজধানী পূর্ব জেরুজালেমসহ একটি সার্বভৌম, স্বাধীন ফিলিস্তিন থাকলে আজকের এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
হামাসের উদ্ধৃতি দিয়ে এরদোয়ান বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে তারা সশস্ত্র শাখাকে বিলুপ্ত করে এটিকে একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সমাধানের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই শান্তি নিশ্চিত করার একটি কার্যকর উপায়। কিন্তু হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হলেও ইসরায়েল এতে সম্মতি দেয়নি। কারণ তারা যুদ্ধবিরতি চায় না। তারা চায় পুরো গাজা দখল করতে।
এরদোয়ান তার সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, গাজায় ইসরায়েলিদের নিষ্ঠুরতা ও গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। আমরা এর সমাধানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা ইসরায়েলকে সমর্থন করে, তাদের এই সমস্ত ঘটনা পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং ঐতিহাসিক দায়িত্ববোধের সঙ্গে শান্তি ও স্থিতি রক্ষার পক্ষে থাকতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: