কিউবাসহ বন্ধু দেশগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তাব রুশ এমপির

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩০ জানুয়ারী ২০২৪ ১৭:২৮

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাজ্যে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এবার কিউবাসহ রাশিয়ার বন্ধু দেশগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে রুশ এমপি অ্যালেক্সেই ঝুরাভলেভ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম নিউজ উইকের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রাশিয়ার পার্লামেন্ট ডুমার প্রতিরক্ষা কমিটি প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান অ্যালেক্সেই ঝুরাভলেভ বলেছেন, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অস্ত্র মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার উচিত বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোতেও নিজেদের কৌশলগত অস্ত্র মোতায়েন করা।

গত রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বোমার চেয়ে তিন গুণ শক্তিশালী একাধিক ওয়ারহেডগুলো ইংল্যান্ডের সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে স্থাপন করা হবে।

ঝুরাভলেভ বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত অস্ত্র মোতায়েন (ইউরোপের) সামরিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’ আর তাই ঝুরাভলেভের পরামর্শ হলো, ‘মস্কোর উচিত যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের কথা বিবেচনা করা এবং সেগুলোকে কিউবা ভেনেজুয়েলা ও নিকারাগুয়ার মতো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে পাঠানো।’

রাশিয়ান এই আইনপ্রণেতা অবশ্য স্বীকার করেছেন, ১৯৬২ সালের কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর থেকে অস্ত্র ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এখন আমাদের ভূখণ্ড থেকে উৎক্ষেপণ করা রুশ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আমেরিকার মাটি থেকে উৎক্ষিপ্ত সাবসনিক মিসাইলগুলোর চেয়ে অনেক দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রের পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে।’

রুশ পার্লামেন্টের এই সদস্য জানান, রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যাপক উন্নতির পাশাপাশি বিশ্বের সাগরগুলোর বিভিন্ন অংশে বিপুল পরিমাণ সাবমেরিনে রুশ অস্ত্রভান্ডারে মজুত আছে। বিষয়টির ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো উসকানির জবাব দেওয়ার অনেক উপায় আমাদের কাছে আছে।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ওয়ারহেড ব্রিটেনে ফিরে এলে মস্কো ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ কার্যকর করতে বাধ্য হবে। রাশিয়াও বারবার পশ্চিমা বিশ্বকে ইউরোপে উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে এবং ইউক্রেন সংঘাতের মূল কারণ হিসেবে ন্যাটোর অব্যাহত পূর্বমুখী সম্প্রসারণকে দায়ী করেছে।

রাশিয়া অবশ্য প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোতে আক্রমণ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ ধরনের দাবিকে ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও জোর দিয়ে বলেছেন, ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার কোনো ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামরিক কোনো স্বার্থ মস্কোর নেই। তার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ব্লকের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে পছন্দ করবে রাশিয়া।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: