এবার ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করল চিলি ও কলম্বিয়া

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৭

ছবি : সংগৃহীত ছবি : সংগৃহীত


অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ চালানোর অভিযোগ করে তেলআবিব থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে লাতিন আমেরিকার দুই দেশ চিলি ও কলম্বিয়া। টানা ২৫ দিনের হামলার মাথায় গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে চিলির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।


বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘনের মুখে চিলি তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো সে রাতেই ঘোষণা করেন যে, ইসরায়েলে নিযুক্ত কলম্বিয়ার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করা হবে। সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা বন্ধ না করে, আমরা সেখানে থাকতে পারব না।’

অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে চিলি। গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে তারা বলেছে যে, ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে শাস্তি দিচ্ছে।

জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৯৫, নিখোঁজ ১২০ জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৯৫, নিখোঁজ ১২০
এর আগে, গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়া। দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেডি মামানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বলিভিয়া গাজা উপত্যকায় সংঘটিত আক্রমণাত্মক ও অগ্রহণযোগ্য ইসরায়েলি সামরিক আক্রমণ নিন্দাভরে প্রত্যাখ্যান করছে এবং ইসরায়েলি রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বলিভিয়া, চিলি এবং কলম্বিয়া—তিন দেশেই এখন ক্ষমতায় বামপন্থী সরকার। বলিভিয়ার মতো চিলিও ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার কোনো উল্লেখ করেনি।

গাজায় যুদ্ধের জেরে ২০০৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল বলিভিয়া। এরপর ২০২০ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলের সমালোচক বলিভিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় এখন প্রেসিডেন্ট লুইস আর্স। গত সোমবার বলিভিয়ায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইলালওয়ানির সঙ্গে বৈঠকের পর ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন আর্স।

ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত সরিয়ে নিল জর্ডানওইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত সরিয়ে নিল জর্ডানও
বৈঠকের পরে সামাজিক প্ল্যাটফর্মে তিনি লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের, বিশেষ করে শিশুদের, যাদের শান্তিতে বসবাসের অধিকার রয়েছে তাদের দুঃখ-কষ্টের মুখে আমরা নীরব থাকতে পারি না। আমরা গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের নিন্দা জানাই।’

গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলও যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এর পর থেকেই দফায় দফায় গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এসব হামলায় প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছে গাজাবাসী, হচ্ছে গুরুতর আহত। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজা ও পশ্চিম তীরে নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৭৯৬। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৩ হাজার ৬৪৮।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: