ইসরায়েলে বন্দুক কেনার হিড়িক

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৫৮

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

 


ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য নিজেদেরকে সশস্ত্র করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘একটি বন্দুক একটি পরিবারকে বাঁচাতে পারে।’

৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ৪০০ নিহত হয়েছে এবং এরপর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজারের বেশি। এর জেরেই ইসরায়েলের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির নাগরিকদের সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

হামাসের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু লোক জানিয়েছে, হাতের কাছে বন্দুক থাকায় নিরাপত্তা বাহিনী না আসা পর্যন্ত তারা তাদের বাড়ি রক্ষা করতে পেরেছিল। নিরাপত্তার জন্য এবং সরকার সম্মতি দেওয়ায় ইসরায়েলে অস্ত্র কেনার চাহিদা বেড়ে গেছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের এমন একজন ইসরায়েলি মা শিমরিত বেন আরোশ। বন্দুকের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য তিনি আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার ছয়টি সন্তান আছে। ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর আমি বুঝতে পেরেছি, অবশ্যই নিজেকে রক্ষা করতে হবে। রাতগুলো খুব ভীতিকর এবং আমার সন্তানদের রক্ষা করার জন্য, নিরাপদে থাকার জন্য একটি বন্দুকের লাইসেন্স প্রয়োজন।’ এদিকে ইসরায়েলে বন্দুকের দোকানে নতুন ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে রাত-দিন কাজ করছে বিক্রেতা এবং উকিল।

হামলার পর থেকে বন্দুকের লাইসেন্সের জন্য এক লাখ ৫০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। যেখানে গত বছর একই সময়ে মাত্র ৪২টি আবেদন জমা পড়েছিল। ইসরায়েল আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে কঠোর এবং লাইসেন্স পাওয়াও বেশ কঠিন। অস্ত্রের জন্য আবেদন করলেও মাঝে মাঝে কয়েক মাস সময় নেয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে নেমেছে। এর মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিকদের আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র রাখতে উৎসাহিত এবং সহায়তা করা।’

ইসরায়েলে বন্দুকের লাইসেন্স পেতে কয়েক মাস সময় লাগত। কিন্তু এখন অনলাইনে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তা পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইসরায়েলে বসবাসরত আরব নাগরিকদের (যারা নিজেদের ফিলিস্তিনি হিসেবে পরিচয় দেয়) জন্য বন্দুকের লাইসেন্স পাওয়াটা কঠিন হবে।

ইসরায়েলের কেফার সাবা শ্যুটিং রেঞ্জে বন্দুক প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিদিন তিন থেকে চারজন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শ্যুটিং রেঞ্জের একজন আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষক গিল শেমেশ বলেছেন, ‘আবেদনকারীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এর মধ্যে বিপজ্জনক এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষের সংখ্যা বেশি। তারা নিজেদের রক্ষা করতে চায়, কারণ তারা সেই ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, কম্পানিটি চাপের কারণে নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগ করছে।

তবে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনজীবীরা বলছেন, আগ্নেয়াস্ত্র খুব সহজে বেসামরিক নাগরিকদের হাতের নাগালে আসায় দুর্ঘটনাজনিত গুলি, হত্যা এবং আত্মহত্যার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। ‘পিস্তল অন দ্য কিচেন টেবিল’ নামে একটি ইসরায়েলি অ্যাডভোকেট গ্রুপ বলেছে, ‘বিপদ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে নিরপরাধদের মৃত্যু ঘটাতে পারে।’


সূত্র : রয়টার্স, আলজাজিরা

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: