ভারত-রাশিয়ার ২ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি সম্পন্ন

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:০৭

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

প্রায় এক দশকের আলোচনার পর ভারত শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে একটি পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন যুদ্ধ সাবমেরিন লিজ নিতে চলেছে। এই চুক্তি বাবদ ভারতকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে বলে জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এ সপ্তাহের নয়াদিল্লি সফরের মধ্যেই এই চুক্তি চূড়ান্ত হচ্ছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা কয়েক বছর ধরে দামের কারণেই আটকে ছিল। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুই পক্ষ এখন সেই চুক্তিতে সম্মত হয়েছে এবং ভারতীয় কর্মকর্তারা নভেম্বরে রাশিয়ার একটি শিপইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন।

ভারত আশা করছে, তারা আগামী দুই বছরের মধ্যে সাবমেরিনটি হাতে পাবে। তবে প্রকল্পের জটিলতার কারণে ডেলিভারি আরও পরে হতে পারে বলে জানা গেছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের পর পুতিনের এটি প্রথম ভারত সফর। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দুই দেশের প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেবেন।

এদিকে, সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ (২৫ শতাংশ জরিমানাসহ) শুল্ক আরোপ করেছে। এরপর থেকেই মোদি সরকার রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে ভারতের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করছে।

পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনগুলো প্রচলিত ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনের চেয়ে অনেক উন্নত। এগুলো সাধারণত বড় হয়, জলের নিচে অনেক বেশি সময় ধরে থাকতে পারে এবং অপেক্ষাকৃত শান্ত হয়, ফলে এদের খুঁজে বের করা কঠিন।

পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলায় ভারত ইতিমধ্যেই দেশীয়ভাবে পারমাণবিক শক্তিচালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী (এসএলবিএমএস) সাবমেরিন তৈরি করেছে। ভারত বর্তমানে ১৭টি ডিজেলচালিত সাবমেরিন পরিচালনা করে।

জানা গেছে, লিজের শর্ত অনুযায়ী এই রুশ যুদ্ধ সাবমেরিনটি যুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এটি ভারতীয় নাবিকদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং নিজস্ব সাবমেরিন তৈরির প্রক্রিয়ায় পারমাণবিক শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের অপারেশনাল দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

রাশিয়ার কাছ থেকে লিজ নেওয়া এ সাবমেরিনটি ভারতীয় নৌবাহিনীতে ১০ বছরের জন্য থাকবে। এর আগে লিজ নেওয়া শেষে রুশ সাবমেরিনটি ২০২১ সালে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। চুক্তিতে রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি মস্কোর সঙ্গেও দীর্ঘদিনের সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছে। যদিও এ বিষয়টির কারণে ভারত ট্রাম্পের সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে। তবে পারমাণবিক সাবমেরিনের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করার সিদ্ধান্ত মোদি সরকারের মস্কোঘেঁষা নীতিই প্রকাশ করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: