ফাইল ছবি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার রুয়ান্ডা ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের (ডিআর কঙ্গো) নেতাদের এক বৈঠকে মুখোমুখি করছেন। কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সহিংসতা অব্যাহত থাকলেও তিনি এ উদ্যোগকে তার সাম্প্রতিক শান্তি অর্জনের আরেকটি সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে যাচ্ছেন।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পূর্ব ডিআর কঙ্গোর অস্থিতিশীল অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খনিজের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করাই এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য। বৈদ্যুতিক গাড়িসহ আধুনিক প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অনেক খনিজই পাওয়া যায় এলাকাটিতে।
রুয়ান্ডার দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট পল কাগামে অশান্ত প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে বর্তমানে সংঘাতের মাঠে সামরিকভাবে স্পষ্ট এগিয়ে আছেন। ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তশিসেকেদির সাথে ট্রাম্পের যৌথ বৈঠক হবে নতুন নামে চালু হওয়া ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিসে। সরকারি ব্যয় কমাতে প্রতিষ্ঠানটি ট্রাম্পই একসময় বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দুই নেতা একটি শান্তিচুক্তি সই করবেন। পাঁচ মাস আগে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করে আরেকটি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বৈঠকের আগের দিনও পূর্ব কঙ্গোতে তীব্র লড়াই চলেছে। রুয়ান্ডার সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র দল এম২৩ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় কঙ্গোর সরকারি বাহিনীর ওপর দাপট দেখিয়ে অবস্থান আরো মজবুত করেছে। কাজিবার প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেনে চুবাকা কালেমবিরে জানান, ‘অনেক ঘরবাড়ি বোমায় ধ্বংস হয়েছে, বহু মানুষ নিহত হয়েছে।’
জানুয়ারির শেষের দিকে এম২৩ গোমা ও বুকাভুর মতো প্রধান নগরীগুলো দখল করায় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত নতুন করে উত্তেজিত হয়। জুনের চুক্তির পর কাতারের মধ্যস্থতায় এম২৩ ও কিনশাসা সরকার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও পরবর্তীতে উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভাঙার অভিযোগ তোলে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ডিআর কঙ্গোসহ বহু সংঘাত তিনি বন্ধ করেছেন। দেশটি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে শত শত মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া যুদ্ধের মধ্যে ছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কঙ্গোর খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এখানে প্রবেশ করতে না পারলে চীনসহ অন্য দেশ এই সম্পদে অনুপ্রবেশ করতে পারে। বিশ্বের অধিকাংশ কোবাল্টের মজুত ডিআর কঙ্গোতে। কোবাল্ট বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির অন্যতম প্রধান উপাদান। পাশাপাশি তামাসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ খনিজও রয়েছে সেখানে।
ডিআর কঙ্গো জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তিতে শান্তি, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমন্বয় ও প্রাকৃতিক সম্পদে কৌশলগত অংশীদারিত্ব অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কঙ্গোর প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র টিনা সালামা বলেন, অর্থনৈতিক ধাপের আগে শান্তি স্থাপন নিয়েই তাদের জোর ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রে কাছে খনিজ বিক্রি করে দেয়া নয়। খনিজের বিনিময়ে শান্তি এমন কথাও সত্য নয়।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: