‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলে এমন হামলা হতো না’ : ট্রাম্প

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪৮

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা হতো না’ এমন কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।রোববার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যম।

সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তেহরান।

এদিকে গভীর রাতে ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার খবর পাওয়ার পর সাবেক যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় শনিবার তার সোশ্যাল-মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ একাধিক পোস্টের মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান।

ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েল আক্রমণের মুখে! এটি কখনোই হতে দেওয়া উচিত ছিল না। আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এটি কখনো ঘটত না। আপনি এটি জানেন, তারাও এটি জানেন, সবাই-ই জানে।

তিনি বলেন, আমেরিকা ইসরায়েলের জন্য প্রার্থনা করছে, ক্ষতির সম্মুখীন সবাইকে আমরা আমাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন জানাচ্ছি।

শনিবার রাতে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ইরান। এ প্রতিক্রিয়া সীমিত ও নির্ধারিত হবে বলেও জানায় ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।

ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় ইরান ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইরানের এই সমন্বিত আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনার সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।

জাতিসংঘে নিয়োজিত ইরানের মিশন জানিয়েছে, ইসরায়েলের ওপর তাদের আক্রমণ সমাপ্ত হয়েছে। তারা এ সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দূরে থাকার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ডেভিড ডেস রোচেস আলজাজিরাকে জানান, ইরান ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি আক্রমণ করায় ঘটনায় অনেকেই বিস্মিত। সাবেক এ যুক্তরাষ্ট্র সেনা কর্মকর্তা জানান, ইরানের এমন আক্রমণ অঞ্চলটিতে সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এ হামলার কারণে হয়তো ইসরায়েলের গাজার ওপর আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এমনকি রাফাহতে সামরিক অভিযান শুরু না করতে ইসরায়েরের ওপর যে চাপ ছিল, এ হামলার কারণে তা হয়তো সরে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্র এ বিশ্লেষক মনে করেন, ইসরায়েল গাজায় তার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের বিনিময়ে আঞ্চলিক সংঘাত এড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সম্ভাব্য সুবিধা আদায় করে নিতে পারে। এদিকে ইরানের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নেতারা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: