
পাকিস্তানে পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহার এবার এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রথমবারের মতো দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশে চালু হয়েছে অত্যাধুনিক ড্রোন-নির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে সরাসরি পরিবেশদূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের নেতৃত্বে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে লাহোরসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প এলাকায়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সামা টিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই উদ্যোগ মূলত গ্রীষ্মকালে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি ও দীর্ঘদিনের নজরদারির ঘাটতি পূরণ করতেই গ্রহণ করা হয়েছে। ড্রোনে ব্যবহৃত থার্মাল প্রযুক্তির সাহায্যে শিল্প এলাকার তাপমাত্রা, ধোঁয়া নির্গমনের মাত্রা, এবং কার্বন নিঃসরণের প্রকৃতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে একটি বিশেষ এয়ারিয়াল সার্ভেইলেন্স কোম্পানি গঠন করেছে, যারা মাঠপর্যায়ে অভিযান শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে লাহোরের মেহমুদ বুটি এলাকায় তিনটি অবৈধ পাইরোলাইসিস প্লান্ট শনাক্ত করেছে, যেগুলো দীর্ঘদিন ধরেই দূষণের উৎস হিসেবে কাজ করছিল।
এ ছাড়া আরও চারটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ লঙ্ঘনের দায়ে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল থেকে শত শত কার্বনে ভরা বস্তা জব্দ করা হয়েছে। এই অভিযানের ভিত্তিতে একটি বিস্তারিত অফিসিয়াল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ইমরান হামিদ শেখ এই উদ্যোগকে ‘পরিবেশগত নজরদারিতে এক নতুন যুগের সূচনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, শুধু শিল্পপ্রতিষ্ঠান নয়, ইটভাটা, কেমিক্যাল কারখানা এবং অন্যান্য দূষণ উত্সও ড্রোনের মাধ্যমে ই-ম্যাপিংয়ে আনা হবে। এমনকি মাঠপর্যায়ের পরিবেশ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের মান যাচাই করতেও ড্রোন ফুটেজ ব্যবহার করা হবে।
এক্ষেত্রে প্রযুক্তির এই ব্যবহার দূষণ প্রতিরোধে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং ত্বরিত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: