পবিত্র কাবাঘরের কিসওয়াহ তথা কালো গিলাফ নিচ থেকে ওপরে তিন মিটার তুলে তাতে সাদা কাপড় মোড়ানো হয়েছে। ৯ জুন শুক্রবার (২০ জিলকদ) রাতে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সির তত্ত্বাবধানে এই কাজ সম্পাদন করা হয়।
পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সের সুদক্ষ কর্মীরা হজের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতি বছর এই কাজ করে থাকেন। কিন্তু প্রতিবছর এভাবে গিলাফের নিচের অংশ ওপরে তোলার কারণ কী, তা অনেকের অজানা।
মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদুল হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা গৃহের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে।
কিসওয়া তথা গিলাফের সংরক্ষণ এবং কাবার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থেই এমনটি করা হয়। কারণ, তাওয়াফ করার সময় হাজীরা কাবা শরিফ স্পর্শ করার চেষ্টা করেন এবং বরকত মনে করে কেউ কেউ গিলাফ কেটে নিতে চান।
অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে। অনেকে গিলাফকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক বস্তু বলে মনে করে। অনেকে সেই কাপড়ে নিজের নাম লিখে স্বস্তিবোধ করে। অথচ এসব কাজের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই হাজিদের ভিড়ের মধ্যেও গিলাফ সুরক্ষিত রাখতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ ওপরে তোলার কাজ করছেন সুদক্ষ কর্মীরা। ছবি : সংগৃহীত
আর খালি স্থানে সাদা কাপড় দিয়ে কাবাঘর মোড়ানো হয়। মূলত এর মাধ্যমে হজের সময় ঘনিয়ে আসার কথা স্মরণ করানো হয়। কাবার দেয়ালের সাদা কাপড় হজের পূর্বপ্রস্তুতির জানান দেয়।
হজের শেষ সময় পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকে। এরপর আগের মতো পুনরায় কালো গিলাফ নামিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবছর ১৫ জিলকদ বা এর এক দিন আগে কিংবা এক দিন পর কাবার গিলাফের অংশ ওপরে তোলা হয়। এরপর থেকেই হাজিদের ভিড় ও তাওয়াফ শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়েরর কারণে তখন আর গিলাফ ওপরে তোলা সম্ভব হয় না। কিন্তু গত ২০২১ সাল থেকে ভিড় কম হওয়াতে ২০ জিলকদ কাবার গিলাফ ওপরে তোলা হয়।
পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ ওপরে তোলার কাজ করছেন সুদক্ষ কর্মীরা। ছবি : সংগৃহীত
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। করোনার আগের মতো বৃহৎ পরিসরে এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর ২০ লাখের বেশি মুসলিম হজে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ১২ লাখের বেশি বিভিন্ন দেশের হজযাত্রী থাকবেন। এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ২২১ বাংলাদেশি হজ পালন করবেন। গত ২১ মে থেকে হজযাত্রীদের ফ্লাইট শুরু হয়। এরই মধ্যে ৬২ হাজার ২০৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
সূত্র : আল-আরাবিয়াহ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: