
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় দুজন, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে একজন এবং চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশন বাদে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন করে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডিসেম্বরের প্রথম ১২ দিনে ডেঙ্গুতে ৫৩ জনের মৃত্যু হলো।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর ঢাকাসহ সারা দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৭ হাজার ৯৪৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ছাড়া পেয়েছেন ৯৫ হাজার ৫৬৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ।
গত বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে গত মাসে, ১৭৩ জনের।
ডেঙ্গুতে এখন সারা বছর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর ধরন চারটি ডেনভি–১, ডেনভি–২, ডেনভি–৩ ও ডেনভি–৪। একজন মানুষের একটি ধরনে একবারই সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ডেনভি–১ ধরনে একবার আক্রান্ত হলে ওই ব্যক্তি আর কখনো একই ধরনে আক্রান্ত হবেন না। কারণ, তাঁর শরীরে ডেনভি–১ প্রতিরোধী ব্যবস্থা (অ্যান্টিবডি) গড়ে ওঠে। কিন্তু তাঁর অন্য ধরন দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, অর্থাৎ একজন ব্যক্তির মোট চারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। একাধিকবার আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়ে।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন সম্প্রতি জানান, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৭০ শতাংশই ডেনভি–২। ডেনভি–৩ ও ডেনভি–৪ দিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ৯ শতাংশ। বাকি ১ শতাংশ আক্রান্ত হচ্ছেন ডেনভি–১ ধরনে। আইইডিসিআরের পরিচালক আরও বলেন, আশা করা যায় ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমে আসবে।
এই ডিসেম্বর মাসেও ডেঙ্গুতে এত মৃত্যুর পেছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত ব্যর্থতাকে দায়ী করেন জনস্বাস্থ্যবিদ মো. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, মশকনিধনের ব্যর্থতা, যেসব ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সেগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ এবং এগুলোর কার্যকারিতাও দেখা হচ্ছে কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।তিনি ডেঙ্গু পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রতিটি ওয়ার্ডে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: