এক মাসের জন্য সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি ১০০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে কিট সংকটের ফলে এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। প্রায় মাসখানেক ধরে ল্যাব সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় উলটো বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে গুনতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। খানপুর ৩০০ শয্যার হাসপাতালে সন্তানের চিকিত্সা নিতে আসা আঁখি বেগম জানান, পরীক্ষার ফি ৫০ টাকা না করে ১৫০ টাকা করা হোক। তারপরও সরকারি হাসপাতালে সেবা নিশ্চিত করা হোক।
রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলে ২০২৩ সালের ১২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিশেষ সতর্কবার্তায় ১০০ টাকার পরীক্ষা ফি ৫০ টাকা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে প্রতিদিন কয়েক শতাধিক রোগী জ্বর নিয়ে আসছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে ভর্তি আছে ৩৫ জন। এখানে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট দিতে পারছে না সরকার। ফলে সরকারের এই বিশেষ উদ্যোগের সুফল পাচ্ছে না নারায়ণগঞ্জবাসী। হাসপাতালে জ্বর নিয়ে আসা রোগী আতিক জানান, তার ডেঙ্গু আছে কি না—জানতে ৭০০ টাকা লেগেছে। বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়েছে।
তবে অন্য সেবার মান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার কথা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজনরা। খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের চিকিত্সা তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য) ডা. মো. আবুল বাসার বলেন, ‘কিট সংকট থাকায় এই হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। দিনদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ছে। কিটের জন্য আমরা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। তারা দিতে পারছে না। বাইরেও কিট কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। একই অবস্থা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের। সেখানেও ডেঙ্গু পরীক্ষায় বেগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।’
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে জেলায় মাত্র ৫০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। তবে গত জুলাই মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৩৫০ জনের। ডেঙ্গুর কিটের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মশিউর রহমান বলেন, হঠাত্ জ্বরের রোগী বেড়ে গেছে। তাই কিটের চাহিদা বেশি। মন্ত্রণালয় আমাদের বাইরে থেকে কিট ক্রয়ের অনুমতি দিয়েছে, কিন্তু সেখানেও কিটের সংকট, তাই দাম বেশি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: