ইরানের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংককে দেউলিয়া ঘোষণা করল সরকার

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৫৬

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত অর্থনীতির মধ্যে ইরান সরকার দেশের অন্যতম বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক ‘আয়ান্দে ব্যাংক’-কে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। ব্যাংকটির সব সম্পদ এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মেল্লি ব্যাংকের অধীনে নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে।

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল।

২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত আয়ান্দে ব্যাংকের সারা দেশে ২৭০টি শাখা ছিল, যার মধ্যে ১৫০টি তেহরানেই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপুল ঋণ ও লোকসানে জর্জরিত হয়ে ব্যাংকটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ জানায়, ব্যাংকটির মোট লোকসান দাঁড়ায় প্রায় ৫২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ এবং ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৯০ কোটি ডলার।

শুক্রবার তেহরানে ব্যাংকটির সাবেক শাখাগুলোর বাইরে বিপুল সংখ্যক গ্রাহককে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশও মোতায়েন ছিল বলে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়।

ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মেল্লি ব্যাংক আয়ান্দে ব্যাংকের সব সম্পদ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মেল্লি ব্যাংকের পরিচালক আবুলফজল নাজারজাদে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘আয়ান্দে ব্যাংক থেকে মেল্লি ব্যাংকে সম্পদ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। জমাদারদের আমানত নিরাপদ, তারা তাদের টাকা তুলতে পারবেন।’

বৃহস্পতিবার ইরানের অর্থমন্ত্রী আলি মাদানিজাদে বলেন, ‘আয়ান্দে ব্যাংকের গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা হামিদরেজা ঘানিয়াবাদি জানান, ব্যাংকটির বিপুল পরিমাণ অনাদায়ী ঋণই দেউলিয়া ঘোষণার মূল কারণ। তিনি ইরনার সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আয়ান্দে ব্যাংকের তহবিলের ৯০ শতাংশের বেশি বরাদ্দ করা হয়েছিল ব্যাংকের মালিকানাধীন প্রকল্প বা ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের কাছে, যেগুলোর ঋণ আর পরিশোধ হয়নি।’

আয়ান্দে ব্যাংক তেহরানের বিলাসবহুল ইরান মল শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণেও অর্থায়ন করেছিল, যেখানে রয়েছে সিনেমা হল ও বরফের স্কেটিং রিংকসহ নানা বিনোদন সুবিধা।

তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানায়, আয়ান্দে ছাড়াও ইরানের আরও পাঁচটি ব্যাংক—সারমায়েহ, দেই, সেপাহ, ইরান জামিন ও মেলাল—আর্থিক সংকটে রয়েছে।

জাতিসংঘ গত সেপ্টেম্বরে ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। নিষেধাজ্ঞাগুলো ২০১৫ সালের পর প্রথমবারের মতো ‘স্ন্যাপব্যাক’ পদ্ধতিতে কার্যকর হলো—যে বছর ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আরোপে সম্মত হয়েছিল। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: