
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দেশটির ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে তুলে নেয়ার প্রস্তাবটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রত্যাখ্যান করেছে। তেহরানের মতে পদক্ষেপটি ‘রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ একটি বড় অর্থনৈতিক আঘাত।
শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের সভায় উত্থাপিত প্রস্তাবটি ৪-৯ ভোটে বাতিল হয়। এর ফলে, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি না হলে নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় কার্যকর হবে।
নিষেধাজ্ঞা বাতিলের পক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান, আলজেরিয়া। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সিয়েরা লিওন, স্লোভেনিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস, পানামা, সোমালিয়া প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে। আর, ভোটদানে বিরত থাকে গায়ানা, দক্ষিণ কোরিয়া।
প্রতিক্রিয়ায়, জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, ‘আজকের এ পদক্ষেপ তড়িঘড়ি, অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধ। ইরান এটি বাস্তবায়নের কোনো বাধ্যবাধকতা স্বীকার করে না। ই থ্রি-এর এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন এবং নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর সরাসরি আঘাত।’
২০১৫ সালের জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জিসিপিওএ) অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখার শর্তে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
বর্তমানে ইউরোপীয় দেশগুলো অভিযোগ করছে, ইরান জিসিপিওএ-তে অনুমোদিত সীমার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরাপত্তা মানদণ্ড মানছে না। তবে, নিরাপত্তা পরিষদের এ ভোট ‘আলোচনার শেষ নয়’ বলেও মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। সবমিলিয়ে ইরান এখন উচ্চ-ঝুঁকির কূটনৈতিক সঙ্কটের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—আর সময় দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: