কেনিয়ায় চলমান বিক্ষোভ অব্যাহত, এ পর্যন্ত নিহত ৩১

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৯ জুলাই ২০২৫ ২৩:১১

ছবি : ইন্টারনেট থেকে ছবি : ইন্টারনেট থেকে

গত সোমবার থেকে কেনিয়ায় চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৩১ নিহত হয়েছে। দেশটির মানবাধিকার কমিশন এই তথ্য জানিয়েছে, যা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিচারের দাবি উসকে দিয়েছে।

কেনিয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (কেএনসিএইচআর) এর আগে জানিয়েছিল, নিহতের সংখ্যা ১১ জন। সংস্থাটি জানায়, রাজধানী নাইরোবি ও অন্যান্য বড় শহরে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভে ১০০-এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে এবং প্রায় ৫৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং তারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহারের জন্য কেনিয়ান পুলিশকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে। তবে কেনিয়া পুলিশ এখনও বলছে, বিক্ষোভে নিহত হয়েছে ১১ জন।

গত মাসে ব্লগার অ্যালবার্ট ওজওয়াং পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়ার পর থেকে দেশটিতে উত্তেজনা বাড়ছে, যা আবার মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে এনেছে এর বছর আগে করবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ক্ষোভে তরুণ বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবন ঘেরাও করেছিল।

সোমবারের এই বিক্ষোভ মূলত কেনিয়ার দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় সংগঠিত হলেও, তা দ্রুতই সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় মূলত তরুণ প্রজন্মের "জেন-জি" জনগোষ্ঠী, যারা "রুটোকে অবশ্যই সরে যেতে হবে" এবং "ওয়ান টার্ম"—এই ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন, যা প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগের দাবিকে সামনে নিয়ে আসে।

মানবাধিকার কমিশন নিহতের সংখ্যা বাড়ার কথা জানিয়ে ব্যাপক নিপীড়ন, সহিংসতা ও পুলিশের নিষ্ঠুরতার অভিযোগ এনেছে। বিক্ষোভ চলাকালে ১২ বছর বয়সী এক শিশু নিজ বাড়ির ভেতর গুলি লেগে মারা যায়। জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ অগ্রহণযোগ্য।

এক বিবৃতিতে কেএনসিএইচআর জোরালোভাবে সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে এবং পুলিশ, সাধারণ নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন আরও জানায়, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের দ্বারা ব্যাপক লুটপাট এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনাও তারা নথিভুক্ত করেছে।

সরকার পুলিশের ভূমিকাকে প্রশংসা করলেও, বিরোধীরা অভিযোগ করছে যে সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গ্যাং ব্যবহার করেছে। তারা সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসার বিরুদ্ধে বয়কট আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রতিরোধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। কেনিয়ার প্রধান বিচারপতি মার্থা কুওমে সতর্ক করে বলেছেন, এই সহিংসতা দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: