
রোববার পোল্যান্ডে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। প্রথম দফার উত্তেজনাপূর্ণ ফলাফলের পর এবার মুখোমুখি হয়েছেন দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী—লিবারেল ওয়ারশ শহরের মেয়র রাফাল ট্রাজকোভস্কি এবং রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী প্রার্থী কারোল নাভরোস্কি।
ভাষ্যকারদের মতে, এই নির্বাচন শুধুমাত্র পোল্যান্ডের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিশা নির্ধারণ করবে না, বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)-এর সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের দিকেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
১ জুন সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত- পোল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী। এই রানঅফ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে কারণ ১৮ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। প্রথম দফায় ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৬৭.৩১ শতাংশ, যা ইঙ্গিত দেয় জনগণের মধ্যে ভোট নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ ছিল।
৫৩ বছর বয়সী রাফাল ট্রাজকোভস্কি প্রথম রাউন্ডে খুব অল্প ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন-তিনি পেয়েছেন মোট ভোটের ৩১.৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে, ৪২ বছর বয়সী কারোল নাভরোস্কি খুব কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন, পেয়েছেন ২৯.৫৪ শতাংশ ভোট। এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ফলে দ্বিতীয় দফার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে।
এবার প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন, কার হাতে থাকবে দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দায়িত্ব।
ট্রাজকোভস্কি একজন লিবারেল রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে চান এবং দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অপরদিকে, নাভরোস্কি একজন রক্ষণশীল ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক, যিনি ঐতিহ্যবাহী ক্যাথলিক মূল্যবোধ এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রণের পক্ষে। তাঁর অবস্থান ক্ষমতাসীন দল 'ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি'-র (PiS) ঘনিষ্ঠ হিসেবে ধরা হয়।
এই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে নজরকাড়া কারণ পোল্যান্ড ইদানীং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, এবং অভিবাসন নীতির বিষয়ে নানা মতবিরোধে জড়িয়েছে। নতুন প্রেসিডেন্টের নীতি ও রাজনৈতিক অভিমুখ এই সম্পর্ক আরও উন্নত করবে নাকি সংকটের দিকে নিয়ে যাবে- তা নির্ভর করছে ভোটারদের রায়ের ওপর।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: