
গত বছরের নভেম্বরে নোভি সাদ শহরের এ দুর্ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যুর পর থেকেই দেশটিতে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী বিক্ষোভ চলে আসছে।
সার্বিয়ায় রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া প্রতিবাদ-বিক্ষোভে শনিবার হাজার হাজার শিক্ষার্থী ক্রাগুজেভায় শহরের রাস্তায় নেমে এসেছে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে সার্বিয়ার নোভি সাদ শহরের ওই দুর্ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে সার্বিয়া জুড়ে দুর্নীতি বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
কয়েক বছরের মধ্যে এই আন্দোলন এখন সবচেয়ে বড় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সার্বিয়ার অনেক নাগরিকই এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ সরকারের দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতিকে দায়ী করেছে।
তবে সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিক্ষোভ জনবাদী ভুচিচের এক দশকের ক্ষমতায় সবচেয়ে বড় হুমকি তৈরি করেছে। শনিবার সকালে, তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকলেও সার্বিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা বাসে এবং পায়ে হেঁটে ক্রাগুজেভাকে পৌঁছায়।
তারা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, হুইসেল বাজিয়ে এবং দেশের পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়। স্থানীয়রা করতালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানায়। বিক্ষোভকারীরা নিহতদের প্রতি প্রতীকী শ্রদ্ধা জানাতে শহরের একটি প্রধান সড়ক ১৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের জন্য অবরোধ করার পরিকল্পনা করেছিল।
২০ বছর বয়সী জোভান বেলগ্রেড থেকে বিক্ষোভে অংশ নিতে আসেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি সুন্দর আগামীর জন্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছি। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি এবং আমি চাই আমার সন্তানরা এখানেই বেড়ে উঠুক।”
ইতমধ্যেই এই বিক্ষোভের কারণে সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোস এবং আরও দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া, কৌঁসুলিরা ১৩ জনকে অভিযুক্ত করেছেন। তবে এর পরেও বিক্ষোভ থামেনি। দুর্ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিক্ষোভ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভবন দখল করছে এবং মহাসড়ক অবরোধ করছে।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী ২২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, “অবরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই, তবে আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
আন্দলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, স্টেশনের ছাদ ধসের সঙ্গে সম্পর্কিত নথিপত্র প্রকাশ করা, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ প্রত্যাহার করা এবং উচ্চশিক্ষার জন্য আরও বড় বাজেট বরাদ্দ করা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: