
জার্মানির মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনে সাধারণ জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করবেন, যারা আগামী চার বছর জার্মান সংসদে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে, কারণ নতুন চ্যান্সেলর কে হবেন, তা নির্ধারণ করবে এই নির্বাচন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৬টা পর্যন্ত চলবে। এটি মূলত এসপিডির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ভেঙে যাওয়ার পর অনুষ্ঠিত একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন। এই নির্বাচনটি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, কারণ বর্তমান সরকারের পতন এবং সিডিইউ (মধ্য ডানপন্থি দল) শক্তিশালী অবস্থানে থাকায় চ্যান্সেলর নির্বাচনে কোন দলের প্রভাব কতটা বাড়বে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, সিডিইউ (খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল) ও তাদের বাভারিয়ান সহযোগী সিএসইউ দল এগিয়ে রয়েছে। তাদের কট্টর ডানপন্থি দল এএফডির তুলনায় দশ শতাংশ বেশি জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে অন্যান্য দল যেমন এসপিডি (সামাজিক গণতন্ত্রী দল) এবং সবুজ দল তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এই মধ্যবর্তী নির্বাচনে সিডিইউ-সিএসইউ’র চ্যান্সেলর প্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের তুলনায় বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন। শলৎসের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় ম্যার্ৎসের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জার্মানির নির্বাচনে ভোটাররা সরাসরি চ্যান্সেলর নির্বাচন করেন না, বরং সংসদ সদস্যদের নির্বাচনে অংশ নেন। কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে, সর্বাধিক আসনপ্রাপ্ত দল সরকার গঠনের চেষ্টা করে। সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের প্রধান তাদের চ্যান্সেলর প্রার্থীকে মনোনীত করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সিডিইউ দলের ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস এই নির্বাচনে প্রধান প্রার্থী হিসেবে শীর্ষে রয়েছেন।
জার্মানির নির্বাচন ব্যবস্থা খুবই বৈচিত্র্যময় এবং গণতান্ত্রিক। এতে দুইটি ভোটের ব্যবস্থা রয়েছে—প্রথম ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচন করা হয় এবং দ্বিতীয় ভোটে রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হয়। দ্বিতীয় ভোটের মাধ্যমে সংসদে দলগুলোর আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। যেকোনো দল যদি ৫ শতাংশ বা তার বেশি ভোট পায়, তবে তারা সংসদে আসন পায়।
এই নির্বাচনের ফলাফল শুধুমাত্র জার্মানির জন্যই নয়, ইউরোপীয় রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। নির্বাচন শেষে কোন দল সরকার গঠন করবে, তা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: