সিরিয়া থেকে রাশিয়ার ‘পাততাড়ি’ গুটানো শুরু!

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩২

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

সিরিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। একে সিরিয়া থেকে রাশিয়ার পাততাড়ি গুটানোর প্রস্ততির আভাস বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিবিসি জানায়, স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে সিরিয়ার রুশ নিয়ন্ত্রিত একটি বন্দর এবং বিমানঘাঁটিতে সামরিক যান দেখা গেছে। পরিবহন বিমানও সম্প্রতি সেখানে পৌছাতে এবং ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।

গত ১৩ ডিসেম্বরে হেমেইমিম রুশ ঘাঁটিতে ভারি একটি পরিবহন বিমান দেখা যায় ছবিতে। বিবিসি ভেরিফাই জিওট্যাগ করা কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখতে পেয়েছে, রাশিয়ার সারি সারি সামরিক ট্রাক উত্তরে এই ঘাঁটিগুলোর দিকে যাচ্ছে।

এসবই সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম কমিয়ে ফেলা কিংবা ঘাঁটি পুরোপুরি গুটিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতির লক্ষণ- বলছে মার্কিন গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি ওয়ার’।

তবে প্রতিষ্ঠানটি এও বলেছে যে, দামেস্কে নতুন সরকারের সঙ্গে মস্কোর আলোচনায় বসার চেষ্টার এ সময়ে ঘাঁটির সামরিক সরজ্ঞাম সরানোটা পূর্বসতর্কতামূলক পদক্ষেপও হতে পারে।

গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের অভিযানে সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্র ছিল রাশিয়া। আসাদের শাসনামলে সিরিয়ায় বিশালকায় সামরিক ঘাঁটি গাড়ে রাশিয়া। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে রাশিয়া সহায়তা করেছিল।

এখন আসাদের পতনের পর রাশিয়া সেসব ঘাঁটি গুটিয়ে নিতে চাইছে এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে স্যাটেলাইট চিত্র থেকে। যদিও এর আগে সিরীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, সিরিয়ার উত্তারাঞ্চল এবং আলাউইতি পর্বতমালা থেকে সেনা সরালেও মূল দুই ঘাঁটি থেকে রাশিয়া সরে যাবে না।

সিরিয়ায় রাশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ঘাঁটি হচ্ছে- সিরিয়ার বন্দর নগরী তারতুসের নৌঘাঁটি। ১৯৭০ এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এই ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে। পরে রাশিয়া ২০১২ সালে ঘাঁটিটি আরও সম্পসারণ করে এবং আধুনিক করে গড়ে তোলে।

আরেকটি হচ্ছে- হেমেইমিমের বিমানঘাঁটি। এই ঘাঁটি কাজ করে যাচ্ছে ২০১৫ সাল থেকে। আসাদের সমর্থনে সিরিয়াজুড়ে বিমান হামলা চালানো হত এই ঘাঁটি থেকে।

দুটো ঘাঁটিই রাশিয়ার জন্য কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর কোরিয়া, উত্তর আফ্রিকা এবং ভূমধ্যসাগর সবই রাশিয়ার এই ঘাঁটিগুলোর আওতার মধ্যে পড়ে।

কিন্তু বাশার আল-আসাদের পতনে সিরিয়ায় রাশিয়ার এই সামরিক উপস্থিতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রাশিয়া বিষয়টি নিয়ে নতুন সিরিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: