আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশেও থামবে না ইসরায়েলের আক্রমণ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৬

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তিনি ইসরায়েলের আক্রমণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেওয়া কোনো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আমাদের দমাতে পারবে না। আমি আমাদের দেশ রক্ষায় যা কিছু প্রয়োজন, তা করব। আমরা কোনো চাপের কাছে নত হব না। ’

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ ও ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর জন্য অভিযুক্ত করেছে।

নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবারের রায়কে ‘জাতিসংঘের ইতিহাসে একটি অন্ধকার দিন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে আদালত মানবতার সুরক্ষার জন্য গঠন করা হয়েছিল, সেটাই আজ মানবতার শত্রু হয়ে উঠেছে।’

তিনি দাবি করেন, আদালতের অভিযোগগুলো ‘সম্পূর্ণ মনগড়া’ এবং বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই। আন্তর্জাতিক আদালত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অপরাধ দেখছে, অথচ আমাদের এবং সারা বিশ্বের বিরুদ্ধে ঘটে চলা ভয়ঙ্কর অপরাধগুলো উপেক্ষা করছে, যোগ করেন তিনি।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের এক ক্রস-বর্ডার হামলায় ১,২০৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক। এর জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় প্রায় ৪৪,০৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা গাজায় তীব্র মানবিক সংকটের বিষয়ে সতর্ক করে বলেছে, খাদ্য এবং ওষুধের অভাবে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আইসিসি জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধের কৌশল হিসেবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি’ এবং ‘হত্যা, নিপীড়নসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ করার যৌক্তিক প্রমাণ রয়েছে।

এদিকে, আদালত হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, গত জুলাইয়ে এক বিমান হামলায় দেইফ নিহত হন, যদিও হামাস এখনো এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

নেতানিয়াহু আদালতের এই পদক্ষেপকে তিরস্কার করে বলেন, ‘তারা মোহাম্মদ দেইফের মৃতদেহের জন্যও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে!’

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইসরায়েল এবং আদালতের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। নেতানিয়াহুর অটল অবস্থান এবং মানবিক সংকট নিয়ে জাতিসংঘের সতর্কতা একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: