ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈরুতে যাচ্ছেন এক আমেরিকান কর্মকর্তা। এবারের আলোচনায় বৈরুত তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেবাননের এক সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স সোমবার এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলের আক্রমণ আরও জোরালো হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবারও গুরুত্ব পাচ্ছে। রবিবার ইসরায়েলি হামলায় বৈরুতের দুটি এলাকায় ছয় জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে হিজবুল্লাহর অন্তত একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। গত এক মাসে প্রথমবারের মতো দেশটির রাজধানীর কেন্দ্রীয় এলাকায় হামলা চালালো ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবে আলোচনার দায়িত্ব গত সপ্তাহে লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার নাবীহ বেরির কাছে হস্তান্তর করা হয়। হিজবুল্লাহ তাকে আলোচনার জন্য মনোনীত করেছে।
বৈঠক করতে ১৯ নভেম্বর, মঙ্গলবার বৈরুতে আমেরিকান প্রতিনিধি অ্যামোস হোচেস্টেইনের আসার কথা রয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন একজন লেবাননের একটি সূত্র । দেশটির সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব লেবানন জানিয়েছে, বেরির জোটের সদস্য কাসীম হাশেম এই সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পদায়ের দাবি, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের ভিত্তিতে লেবাননে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে হবে। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। প্রস্তাবের শর্ত অনুযায়ী, অস্ত্র ও সদস্যদের নিয়ে সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে লিটানি নদীর উত্তরে সরে যাবে হিজবুল্লাহ।
তবে ইসরায়েলের কিছু দাবির কারণে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জটিল হয়ে পড়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ কোনও চুক্তি লঙ্ঘন করলে ইসরায়েল প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে। লেবানন এই দাবি প্রত্যাখান করেছে।
প্রায় এক বছর ধরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে জড়িত থাকার পর লেবাননে হামলা তীব্রতর করে ইসরায়েল। তাদের দাবি, হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে সীমান্ত থেকে সরে যাওয়া লক্ষাধিক নাগরিককে তাদের বাসস্থানে ফিরিয়ে আনতে এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। গাজা যুদ্ধে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে হিজবুল্লাহ হামলা চালানো শুরু করলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
ইসরায়েলি আক্রমণে লেবাননে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর জাতিসংঘের ১৭০১ নম্বর প্রস্তাবের ভিত্তিতে দুদেশের সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। তবে সাম্প্রতিক সংঘাতের ফলে এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর দীর্ঘদিনের শত্রুতা ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: