এবার পূর্ব এশিয়ায় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। দীর্ঘদিন ধরেই চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে বেশকিছু ইস্যুতে মতভেদ ছিল। সম্প্রতি সেই মতপার্থক্য আরও বেড়েছে। আবার আগামী বছর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীন যুদ্ধ শুরু করতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চীনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বলছে, এর আগেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে বেইজিং।
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চীন-তাইওয়ানের মধ্যে এত উত্তেজনা আর কখনও দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলেছে চীন। তার পদক্ষেপ হিসেবে তাইওয়ান সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
জানা গেছে, তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। এতে চীনের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী ছাড়াও রকেট ফোর্স, কোর্স্টগার্ড ও অন্যান্য বাহিনীও অংশ নেয়।
চীনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই এই মহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা বলছে, যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান বিভিন্ন দিক থেকে তাইওয়ানের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এ সময় তারা যৌথ আক্রমণের মহড়া চালায়। যুদ্ধ প্রস্তুতি ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও এলাকায় ব্লকেড দেওয়া, জল ও স্থলে কীভাবে হামলা চালানো হতে পারে, তার নমুনা দেখাতেই এই মহড়ার অনুষ্ঠিত হয়।
চীনের সাম্প্রতিক সময়ে এই আগ্রাসী আচরণের জন্য বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে তাইপেকে দায়ী করা হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন লাই চিং-তে। তখনই তিনি কড়া ভাষায় বেইজিংয়ের সমালোচনা করেন। তবে প্রকাশ্যে দেওয়া ভাষণে তাইওয়ানের স্বশাসন বজায় প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চিং-তের এমন মন্তব্যের পর বেজায় চটেছে বেইজিং।
চিং-তের পূর্বসূরিরা অনেকটা রয়েসয়ে এই ইস্যুতে কথা বলেছেন। কিন্তু তাইওয়ানের নতুন এই প্রেসিডেন্ট চেয়ারে বসেই যেন আগুন নিয়ে খেলা শুরু করলেন। তার সর্বশেষ এই মন্তব্যের পর, সামরিক মহড়া করে তাইওয়ানকে জবাব দেয় চীন। এরপর পাল্টা তাইওয়ানও পদক্ষেপ নেয়। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিজেদের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় যথাযথ সেনা পাঠানো হয়েছে। তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে তাইওয়ান।
তাইওয়ানের স্বশাসন নিয়েই বেইজিংয়ের সঙ্গে তাইপের মূল দ্বন্দ্ব। চীনের ভাষায়, তাইওয়ান তাদেরই অংশ। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে যুক্ত করার স্বপ্নও দেখে বেইজিং। এজন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগেরও হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা। যদিও তাইওয়ানিদের বিশ্বাস, তারা আলাদা জাতি। তবে অধিকাংশ তাইওয়ানি চীন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা বা দেশটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে নয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: