সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কেন্দ্রে চলে আসে ইরানের ভয়ংকর অস্ত্রের খবর। তেহরানের পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর খবর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, আর এতে বিপদের ঘণ্টা বেজে উঠে মূলপ্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েলের প্রাণকেন্দ্রে। এসব প্রতিবেদনের সত্যতা যদিও যাচাই করা হয়নি, তারপরেও এই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জরুরিভিত্তিতে বৈঠক এবং আলোচনা শুরু হয়ে যায়।
এই খবরটি তখনই চড়াও হয় যখন ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সংঘাত এবং উত্তেজনার পারদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এই অঞ্চলের দুই প্রভাবশালী দেশই দীর্ঘদিন ধরে বাকবিতণ্ডা এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের যুদ্ধে জড়িয়ে রয়েছে।
সফলভাবে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা সম্পর্কিত খবর বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রকাশিত হয়, যা বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ইরান শুরু থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ হওয়ার ইচ্ছাকে অস্বীকার করে আসছে। তেহরান যা বলছে তা হচ্ছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ ইরানের এমন উদ্দেশ্য সম্পর্কে দীর্ঘকাল ধরে সন্দিহান। এবং তারা প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে, সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে বেসামরিক শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রাকে ছাড়িয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের দিকে এগোচ্ছে ইরান।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অসমর্থিত প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, ইরান তার পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলকে পৌঁছে গেছে। এই সম্ভাব্য অর্জন মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ রণকৌশলকে সম্পূর্ণ পাল্টে দেবে। যেখানে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত সামরিক শক্তির বিবেচনায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে তার অঘোষিত পারমাণবিক ক্ষমতার মাধ্যমে।
এমন অসমর্থিত এবং অপ্রমাণিত প্রতিবেদনের বরাতে সতর্কতার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। তেলআবিবের কর্মকর্তারা, যারা ইরানি শাসনের স্পষ্ট সমালোচক এবং তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তারা অনেক বছর ধরে এমন আলোচনা সম্পর্কে সজাগ রয়েছে। তবে তারা সাম্প্রতিক এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে বিবেচনায় নিয়ে বলতে চাইছে যে, যদি ইরানের উৎক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র থাকে তবে তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হিতে বিপরীত হবে তেল আবিবের জন্যে।
আঞ্চলিক হুমকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা কবচ হিসেবে নিজস্ব উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন আয়রন ডোম এবং ডেভিডস স্লিংসহ প্রথাগত সামরিক শক্তির ওপর দীর্ঘকাল নির্ভরশীল ছিল তেল আবিব। এ অবস্থায় যদি ইরান পারমাণবিক বোমা উৎক্ষেপণে সফল হয়ে যায় তবে ইসরায়েলকে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে।
ইসরায়েলি সূত্রের মতে, সম্ভাব্য পারমাণবিক বোমার পরীক্ষার খবর তেলআবিবকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো বাতিল করতে বাধ্য করেছে। ইসরায়েলি সামরিক পরিকল্পনাকারীরা পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতে লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং ইরাক ও সিরিয়ার শিয়া মিলিশিয়াদের ওপর হামলা শিথিলের পরামর্শ দেয়। সংবাদমাধ্যম দ্য মুসলিম মিররে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: