ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় স্থল, জল ও আকাশপথে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েল। উপত্যকার উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত এ হামলায় গাজার বিভিন্ন এলাকা তছনছ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে হামাস যুদ্ধবিরতির আলোচনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এটা গাজায় সংঘাতের অবসানের আশা আরও কমিয়ে দিয়েছে।
গাজার নুসেইরাত ও খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নুসেইরাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন।
১৫ জুলাই সোমবার গাজার উত্তরাঞ্চলের তাল আল-হাওয়া, শেখ আজলিন, আল-সাবরা এলাকা এবং নুসেইরাত আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার গোলাবর্ষণ চলে। মধ্য গাজার আল-মুগারাকা এলাকাও ইসরায়েলের গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেড ক্রিসেন্টের তথ্য অনুযায়ী, আল-মাগাজি শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় তিন শিশুসহ পাঁচ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস ও রাফা এলাকায় সামরিক নৌযান ও হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা গাজার উপকূলীয় এলাকাগুলোয় সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রাফা ও মধ্য গাজায় হামলা চালিয়ে তারা ‘বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা’কে হত্যা করেছে। উপত্যকাটির বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীও হামলা চালিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৮ হাজার ৬৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৮৯ হাজার ৯৭ জন আহত হয়েছেন। ওই দিন হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলে ঢুকে ১ হাজার ১৯৫ জনকে হত্যা করেন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করেন, যাদের মধ্যে ১১৬ জন এখনো হামাসের হাতে বন্দী।
জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েল ও হামাস দফায় দফায় আলোচনায় বসছে, তবে কোনো সমাধান আসছে না। রবিবার হামাস ঘোষণা করে, তারা যুদ্ধবিরতির চলমান আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে। হামাস নেতা মোহাম্মদ দাইফের হত্যাচেষ্টার সময় ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি।
এদিকে, আজ এক বিবৃতিতে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেছে, আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়ে আমেরিকান সরকার জাতিগত নিধনে সমর্থন দিচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুদের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র অবজ্ঞা দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করে হামাস।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: