ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, সাইদ জলিলির সঙ্গে পেজেসকিয়ানের টক্কর

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৯ জুন ২০২৪ ১০:৫৩

গ্রাফিক্স গ্রাফিক্স

ইরানের সংস্কারবাদী নেতা মাসুদ পেজেসকিয়ান পেশায় হার্ট সার্জন ছিলেন তিনি। কিন্তু নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ডেপুটি স্পিকারের মতো পদও। এবার ক্ষমতা শীর্ষে তার আরোহণ করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনপূর্ব জরিপে উঠে এসেছে, পেজেসকিয়ানের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

গত কয়েক দশকে ইরানে যিনিই ক্ষমতায় এসেছেন, তিনিই তীব্র যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব পোষণ করেছেন। তবে এবার সেই ছন্দে পতন ঘটতে পারে। পেজেসকিয়ান নির্বাচনে জয়ী হলে বদলে যেতে পারে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি।

কয়েক দিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন তিনি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইসরায়েল ছাড়া বাকি সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চান পেজেসকিয়ান।

আগাম এই নির্বাচনে কট্টরপন্থি সাইদ জলিলির সঙ্গে পেজেসকিয়ানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও অনেকটাই এগিয়ে পেজেসকিয়ান। এখন পর্যন্ত ৫৩ লাখ ৫৪ হাজার ভোট পেয়েছেন এই সংস্কারবাদী নেতা। তার কাছাকাছি আছেন জলিলি। তিনি এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৯ ভোট। ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নির্বাচনপূর্ব এক জরিপে দেখা গেছে, শুক্রবারের ভোটাভুটিতে স্পষ্ট বিজয়ী হচ্ছেন পেজেসকিয়ান। ইরানের রিপাবলিকান গার্ডের জরিপ বলছে, নির্বাচনে কমপক্ষে ৩৭ শতাংশ ভোট পাবেন সংস্কারবাদী পেজেসকিয়ান। মাশহাদের ফেরদৌসি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত আরেকটি জরিপেও এগিয়ে রয়েছেন তিনি।

ওই জরিপ বলছে, নির্বাচনে ৪২.৩ শতাংশ ভোট পাবেন পেজেসকিয়ান। তবে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে ৫ জুলাই।

আজারবাইজানের বংশোদ্ভূত পেজেসকিয়ানের জীবন সংগ্রামে ভরা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তানদের একাই মানুষ করেছেন। কিন্তু এ জন্য কখনও কারও সহমর্মিতা আদায়ের চেষ্টা করেননি তিনি। সাবেক সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির প্রশাসনে উপস্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার মাধ্যমে পেজেসকিয়ানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। পরবর্তীত স্বাস্থ্যমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ পর্যন্ত ৫ বার পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন পেজেসকিয়ান।

হাসান রুহানির শাসনামলে করা পরমাণু চুক্তির একজন কট্টর সমর্থক ছিলেন পেজেসকিয়ান। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য বা দুর্নীতি না করেই ইরানের রাজনীতিতে নিজের জায়গা শক্ত করেছেন তিনি। দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে নির্বাচনে তিনি জনপ্রিয় নেতা মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সমর্থক ভোট পাবেন বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে বিদেশনীতি নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে তার স্পষ্ট বিভেদ, পেজেসকিয়ানের পথ কঠিন করে দিতে পারে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: