ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৫ প্রার্থী

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৭ জুন ২০২৪ ১১:০৫

গ্রাফিক্স গ্রাফিক্স

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হবার পর পদটি শূন্য হয়ে যাওয়ায় নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে গার্ডিয়ান কাউন্সিল। এ ঘোষণা অনুসারে দেশটিতে আগামীকাল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের তথ্যমতে, দেশটির ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে নির্বাচনের আগমুহূর্তে এক প্রার্থী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন পাঁচ প্রার্থী। চীনের সংবাদমাধ্যম চিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজিজাদেহ হাশেমি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

ইরানের নির্বাচনসংক্রান্ত দেখভালের দায়িত্বে থাকা গার্ডিয়ান কাউন্সিল জানিয়েছে, নির্বাচনে প্রার্থিতা অনুমোদন করা ছয় প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন রক্ষণশীল এবং একজন মধ্যপন্থি।

কাউন্সিল অনুমোদিক প্রার্থীরা হলেন পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক সাবেক মধ্যস্থতাকারী সাইদ জালিলি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তফা পোউর মোহাম্মাদি, তেহরানের মেয়র আলি রেজা জাকানি, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমির হোসেইন গাজিজাদেহ হাশেমি এবং পার্লামেন্ট সদস্য মাসুদ পেজেশকিয়ান।

এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনার বরাতে সংবাদমাধ্যম জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

গত ২০ মে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর এটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই। তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিতের পর ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল আগামী ২৮ জুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন ছিলেন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ইব্রাহিম রাইসিকে মনে করা হয় একদিন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

প্রেসিডেন্ট রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা। ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে তিনি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: