গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ২৪ জুন, সোমবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে গাজার বর্তমান পরিস্থিতি, ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট গুরুতর মানবিক দুর্দশার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই নেতা। জর্ডান নিউজ এজেন্সি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
এলিসি প্রাসাদে বৈঠকের সময় গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাদশাহ আবদুল্লাহ এবং ম্যাঁক্রো। তারা অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় অব্যাহত সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
জর্ডানের বাদশাহ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট জরুরী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। তারা অন্যান্য আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছেন। বৈঠকে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি এবং ফ্রান্সে নিযুক্ত জর্ডানি রাষ্ট্রদূত লীনা আল-হাদিদও উপস্থিত ছিলেন।
গাজার সংঘাত মধ্যপ্রচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বাদশাহ আবদুল্লাহ। এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, দুই রাষ্ট্র সমাধানই একটি ন্যায়সঙ্গত এবং ব্যাপক শান্তি অর্জনের একমাত্র পথ।
অধিকৃত পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাদশাহ আবদুল্লাহ। তিনি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরমপন্থী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার নিন্দা করেছেন। জেরুজালেমের মুসলিম ও খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থানগুলোর ঐতিহাসিক এবং আইনগত মর্যাদা লঙ্ঘন করে এমন একতরফা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।
এদিকে লেবাননের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার গুরুত্বও তুলে ধরেন দুই নেতা। গাজায় ত্রাণ সংস্থাগুলোকে ক্রমাগত টার্গেট করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন বাদশাহ আবুদুল্লাহ। তিনি ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর প্রতি ফ্রান্সের সমর্থনের প্রশংসা করেছেন। সংস্থাটি এই অঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৮ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ৩৭ হাজার ৫০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
সূত্র: আরব নিউজ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: