গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ফরাসি নাগরিককে গ্রেফতার করলো রাশিয়া

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৭ জুন ২০২৪ ১৫:৫০

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


সামরিক তথ্য সংগ্রহ ও বিদেশি এজেন্ট হিসেবে বৈধতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ফরাসি এক নাগরিককে গ্রেফতার করেছে রাশিয়া। ওই ব্যক্তি জেনেভাভিত্তিক একটি সংস্থার হয়ে কাজ করতেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিটি বলেছে, লরেন্ত ভিনাতিয়ার (৪৭) নামক ওই ব্যক্তিকে কয়েক বছর ধরেই নজরদারিতে রেখেছিল রাশিয়া। তিনি রাশিয়ার সামরিক ও সামরিক-প্রযুক্তিগত কার্যক্রমের তথ্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংগ্রহ করছেন বলে সন্দেহ করে আসছিল ক্রেমলিন।

তদন্তকারী কমিটি একটি ছোট্ট ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি রেস্তোরাঁর ছাদে জিন্স ও কালো টি-শার্ট পরে বসে থাকা এক ব্যক্তিকে ঘিরে রয়েছেন রুশ পুলিশের মুখোশধারী সদস্যরা। পরে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে নেওয়া হয়।

যদিও আটক করা ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। কারণ ভিডিওতে তার মুখ ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে। তবে রাশিয়ার রাষ্ট্র-চালিত বার্তা সংস্থা তাস তাকে ভিনাতিয়ার হিসেবেই চিহ্নিত করেছে।

সেন্টার ফর হিউম্যানিটারিয়ান ডায়ালগ (এইচডি) জানিয়েছে, ভিনাতিয়ার তাদের সংস্থায় রাশিয়া ও ইউরেশিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন। রাশিয়া তাকে গ্রেফতার করেছে ও এইচডি তার মুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে ভিনাতিয়ারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার দাবি, ভিনাতিয়ার ফ্রান্সের হয়ে বিদেশি তথ্য সংগ্রহের কাজ করেননি। মস্কো মূলত বিভ্রান্তি ছড়াতেই তাকে গ্রেফতার করেছে।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে গুপ্তচরবৃত্তি ও সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতারের প্রবণতা বাড়িয়েছে।

এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুপ্তচরবৃত্তিসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাশিয়ায় আটক হওয়া পাঁচ সাংবাদিকের একজন হচ্ছেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সোটাভিশনের সাংবাদিক অ্যান্তোনিনা ফাভরস্কায়া। প্রয়াত বিরোধী রাজনীতিক অ্যালেক্সেই নাভালনির সমাধিতে ফুল দেওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি ১০ দিনের জন্য কারাবন্দী ছিলেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গেছে, ফাভরস্কায়ার সহকর্মী আলেকজান্দ্রা আস্তাখোভা ও আনাস্তাসিয়া মুসাতোভা আটক কেন্দ্রে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলে তাদেরও আটক করে পুলিশ। পরদিন ভোরে পুলিশ সোটাভিশন থেকে আরেক সাংবাদিক একেতেরিনা অ্যানিকিয়েভিচ ও রুশনিউজের সাংবাদিক কনস্ট্যান্টিন ঝারভকে গ্রেফতার করে। তারা ফাভরস্কায়ার বাড়ির কাছে চিত্রগ্রহণ করছিলেন।

কনস্ট্যান্টিন ঝারভ বলেন, আটকের সময় পুলিশ আমাকে লাথি মেরেছে, আমার মাথায় পা রেখেছে ও আমার পা দুটি পেঁচিয়ে রেখেছিল। আমি যখন উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম, তখন পুলিশ আমাকে নিয়ে উপহাসও করেছিল। পরে তারা বিস্ফোরক আছে কি না, তা দেখতে আমার ব্যাগে তল্লাশি চালায়।

 

সূত্র: আল জাজিরা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: