সুইজারল্যান্ডে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বর্ণবাদ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ মে ২০২৪ ১৯:৩১

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো সুইজারল্যান্ডেও বাড়ছে বর্ণবৈষম্য ও হয়রানির ঘটনা। গেলো বছর দেশটিতে প্রথমবারের মতো কর্মক্ষেত্রের চেয়ে বেশিরভাগ বর্ণবৈষম্যের ঘটনা ঘটছে স্কুলে। আর গেলো পাঁচ বছরে সুইজারল্যান্ডে বসবাসকারী প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন ব্যক্তি জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের রেসিজম অ্যাডভাইজরি নেটওয়ার্ক এবং মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। খবর সুইসইনফো'র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দেশটিতে ৮৭৬টি বর্ণবাদের ঘটনা ঘটেছে। যা ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি। স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গই বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

বর্ণবৈষম্যের শিকার ব্যক্তিদের জন্য কাজ করে এমন একটি কাউন্সেলিং নেটওয়ার্কের প্রধান জিনা ভেগা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে উদ্বিগ্ন বাড়ছে। তারা অপমান, মৌখিক অপব্যবহার, এমনকি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কাজ করা ফেডারেল কমিশনের পরিচালক আলমা উইকেন বলেন, সুইজারল্যান্ডে অতীতের তুলনায় বর্তমানে স্কুলগুলোতে বর্ণবৈষম্য বেড়েছে।

তবে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও এ বিষয়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণের ফলে পরিস্থিতি পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

বর্ণবাদ বিরোধী একটি গ্রুপ পরিচালিত আরেকটি জরিপে বলা হয়েছে, দেশটির ১৭ শতাংশ মানুষ বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

জাতিগত বৈষম্যের শিকার ব্যক্তিদের বয়স ১৫ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশ বলেছেন, তারা তাদের দৈনন্দিন কর্মজীবনে বা চাকরি খুঁজতে গিয়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

জরিপে আরও দেখা গেছে, ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রকাশ্য জনসম্মুখে এবং ২৭ শতাংশ স্কুল জাতিগত বৈষম্যের প্রধান জায়গা।

এর আগে জাতিসংঘের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ জানিয়েছিল, সুইজারল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ প্রতিদিন বর্ণবৈষম্যের শিকার হওয়ার পাশাপাশি পুলিশের দ্বারাও হেনস্থার শিকার হয়।

দেশটিতে বসবাস করা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছে ওয়ার্কিং গ্রুপটি।

সুইস কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নানা ইতিবাচক উদ্যোগ নিলেও, দেশটির শক্তিশালী কাঠামোগত বৈষম্য আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

সবশেষ ইউরোপিয়ান এজেন্সি ফর ফান্ডামেন্টাল রাইটস (এফআরএ)-র এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপের দেশ জার্মানি, অস্ট্রিয়া এবং ফিনল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীরা গায়ের রঙের কারণে বেশি বৈষম্য এবং হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷ এছাড়াও যুক্তরাজ্য, ইতালি, ইউক্রেনের মতো দেশেও বৈষম্য বাড়ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: