ইসরায়েলের গোলাবারুদের মুহুর্মুহু হামলায় কেঁপে উঠছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পুরো গাজা যেন ধ্বংসের জনপদে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে রক্তপাত, ক্ষুধা আর হাহাকারের সঙ্গে লড়াই করতে করতে নিঃশেষ গাজাবাসী। সেখানে ক্ষুধার তীব্রতা যেন মৃত্যুকেও ছাপিয়ে গেছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বুলেট উপেক্ষা করেই ত্রাণবাহী ট্রাকের দিকে ছুটছে ফিলিস্তিনিরা। দুটো শুকনো রুটির জন্য ঘিরে ধরছে ত্রাণবাহী ট্রাক। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি, সোমবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-জাজিরার যাচাইকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে শত শত ফিলিস্তিনির ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালানোর পরও পালিয়ে যাওয়ার আগে তারা সাহায্যকারী ট্রাকের দিকে ছুটে আসছে ত্রাণের জন্য। ত্রাণবাহী ট্রাককে ঘিরে ধরছে তারা।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তুমুল লড়াই, জ্বালানিসংকট ও ইসরায়েলের সেনাদের অব্যাহত অভিযানের মুখে বন্ধ হয়ে গেছে ‘নাসের’ নামের গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতাল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদ্রা বলেন, ‘সেখানে সেবাদান একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে মাত্র ৪টি মেডিকেল দলে ২৫ জন কর্মী আছেন। ভেতরে যেসব রোগী আছেন, এখন শুধু তাদেরই সেবা দিচ্ছেন কর্মীরা।’
আল-কিদ্রা জানান, তিন দিন ধরে জেনারেটর চালু করতে না পারায় হাসপাতালে পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে সেবা দেওয়া প্রয়োজন, তাদের সেবা দিতে পারছেন না অবশিষ্ট কর্মীরা। বিদ্যুৎ না থাকায় অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ। অক্সিজেন না পেয়ে অন্তত আট রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৭ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন। আহত হওয়ার সংখ্যা ৮ হাজার ৭৩০। এ হিসাব ইসরায়েল সরকারের।
হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের হামলা থেকে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আশ্রয়শিবির-কিছুই বাদ যায়নি।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৮৫ জনে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬৮ হাজার ৮৮৩ জন। যার বেশিরভাগ নারী ও শিশু। উদ্বাস্তু হয়েছে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৮ লাখের বেশি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: