ফ্রান্সে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। সবজি ছড়িয়ে ও সারি সারি ট্রাক্টর দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়েছে। সস্তায় জিনিস আমদানি ও চাষের খরচ সমানে বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। প্যারিসের বিএফএম টিভি-কে এক কৃষক জানিয়েছেন, তারা ধীরে ধীরে প্যারিসের খুব কাছে অগ্রসর হচ্ছেন।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে কৃষকদের শক্তিশালী সংগঠন ‘এফএনএসইএ’ সরকারের হাতে তাদের একশটি দাবি তুলে দিয়েছে। তারা কৃষিক্ষেত্রের আরো সুরক্ষা চেয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ সবজি প্রতিবেশী দেশ থেকে কম দামে আমদানি করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে সস্তায় সবজি এনে তাদের অন্য়ায় প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে এবং আমলাতন্ত্র তাদের ওপর অনেক বেশি বোঝা চাপাচ্ছে।
ফ্রান্সে কৃষকদের ‘এফএনএসইএ’ ইউনিয়ন খুবই প্রভাবশালী। তারা দাবি করেছে, কৃষকদের ট্রাক্টর ও গাড়ির ক্ষেত্রে ডিজেলে ছাড় দিতে হবে। অবিলম্বে ইইউ-র দেয়া কৃষি ভর্তুকি তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, বিমার অর্থ দেয়ার গ্যারান্টি দিতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতি হলে তা পূরণ করতে হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়েছে কৃষকদের বিক্ষোভ।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে তা শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই জার্মানির কৃষকরাও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ফ্রান্সের এই কৃষক বিক্ষোভের মোকাবিলা করা এখন সরকারের সামনে বড় চ্য়ালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ দুই সপ্তাহ আগে নিয়োগ করেছেন। মাক্রোঁর আশা, প্রশাসনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার অর্থ, পরিবেশ ও কৃষিমন্ত্রীরা আলোচনায় বসেছিলেন। তারা শুক্রবারের মধ্যে কৃষকদের বিষয়ে একটা ঘোষণা করতে চান। তিন মন্ত্রী কৃষকদের সমস্যা, বিশেষ করে ডিজেল, পশুপালন ও কৃষিজ জিনিসের দাম নিয়ে কথা বলেছেন। ফ্রান্সের সরকার একটি কৃষি আইন আনতে চাইলেও আপাতত সেটা বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচন আসছে সামনে। এই অবস্থায় কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বেশ চিন্তায় আছেন ম্যাখোঁ । কারণ, অতি দক্ষিণপন্থিরা এই বিক্ষোভকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাদের অভিযোগ, সরকার ইইউ-এর কৃষক-বিরোধী নিয়ম সমর্থন করছে। আর এই নিয়মগুলোই সব দেশকে অনুসরণ করতেই হবে। অতি-দক্ষিণপন্থি নেতা লে পেন বলেছেন, ম্যাখোঁ কৃষকদের কাঁধে হাত রেখে কথা বলেন, তারপর ছুরি দিয়ে তাদের পিঠে আঘাত করেন। কৃষকরাই সরকারের সবচেয়ে বড় শত্রু।
কৃষক ইউনিয়নের এক নেত্রী জানিয়েছেন, মানুষকে ভালো খাবার খেতে হলে, উপযুক্ত দাম দিতে হবে। তাঁর দাবি, চাষ করে কৃষকরা নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারছেন না তাই তারা হতাশ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: