পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একটি লেখা সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট প্রকাশ করেছে। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, কারাগারে থাকা ইমরান কীভাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে লেখা প্রকাশ করতে পারেন।
বিতর্কের মুখে মুখ খুলেছেন ইমরান। জানিয়েছেন, এটা আসলে তাঁর লেখা নয়। বরং লেখাটি লিখেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। বিভিন্ন সময় যাঁরা কারাগারে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের নিবন্ধটির মূল বিষয় নিয়ে বলেছিলেন তিনি। পরে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শব্দ বসানো হয়েছে।
ইমরান এখন আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। সেখানেই আদালত বসিয়ে তাঁর বিচার চলছে। গতকাল সোমবার কয়েক সাংবাদিককে কারাগারের ভেতরের সেসব কার্যক্রম দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁরা ইমরানের সঙ্গেও কথা বলেন। আর তখন ইমরান জানান, ইকোনমিস্টে প্রকাশিত লেখাটি তিনি লেখেননি।
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান বলেন, ওই লেখার মূল বিষয় তিনি জানেন। তবে তাঁর নামে প্রকাশ করা হলেও তিনি নিজে সেটি লেখেননি। তাঁর বলে দেওয়া মূল বিষয় ধরে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শব্দ বসানো হয়েছে।
ইমরান খানের নামে প্রকাশিত লেখাটিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না-ও হতে পারে। তারপরও যদি নির্বাচন হয়, সেটা ‘বিপর্যয় ও প্রহসন’ হবে। কেননা, তাঁর দল পিটিআইকে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর মতো মৌলিক অধিকার পূরণ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ওই লেখার বিষয়বস্তু ও সুর ইমরানের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদিও অনেক পর্যবেক্ষক সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, এ লেখা আদৌ ইমরান খান নিজে লিখেছেন কি না।
এ নিয়ে সরব হয়েছে পাকিস্তানের প্রশাসন। গতকাল দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মর্তুজা শোলাঙ্গী বলেন, ‘কারাগারে বসে কেউ নিবন্ধ কিংবা বই লিখতে পারবেন না, বিষয়টা এমন নয়। আমাদের আপত্তি হলো, পিটিআইয়ের সাবেক প্রধান ওই লেখা লেখেননি।’
তথ্যমন্ত্রী মর্তুজা আরও বলেন, কারাগার থেকে কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন কোনো আধেয় (কনটেন্ট) ‘ফাঁস’ হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, পিটিআইয়ের সাবেক চেয়ারম্যানের নামে ইকোনমিস্ট ‘ভুতুড়ে লেখা’ ছেপেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইকোনমিস্টে ইমরানের নামে ওই লেখা প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর প্রকাশনাটির অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লেখাটি সাতবার পোস্ট করা হয়। এসব পোস্ট আড়াই কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: