জাপানে যাত্রীবাহী ও কোস্টগার্ড উড়োজাহাজের সংঘর্ষে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ৩৭৯ আরোহীর সবাই বেঁচে ফিরলেও পাঁচ কোস্ট গার্ডের মৃত্যু হয়েছে। ২ জানুয়ারি, মঙ্গলবার টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে অবতরণের পর রানওয়েতেই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। এটির আরোহীদের সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজের প্রায় সব আরোহীই নিহত হয়েছেন।
জাপানের পরিবহনমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজে থাকা পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্যাপ্টেন উড়োজাহাজ থেকে বের হতে সক্ষম হলেও গুরুতর আহত হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, কোস্টগার্ড উড়োজাহাজটি গতকাল সোমবার তীব্র ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে খাবার নিয়ে যাচ্ছিল। জাপান বিমান সংস্থার একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ রানওয়েতে অবতরণের পরই এটির সঙ্গে কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজটির সংঘর্ষ হয়।
কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত উড়োজাহাজটি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য জাপানের পশ্চিম উপকূলের নিগাতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছিল। নতুন বছরের প্রথম দিনই জাপানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয় এবং এতে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজের ছয়জন ক্রুর পাঁচজনই নিহত হয়েছেন বলে জানায় দেশটির সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে। এর আগে কোস্ট গার্ডের এক মুখপাত্র বলেন, পাঁচজন ক্রুকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে দুর্ঘটনা কবলিত ক্যাপ্টেন বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন।
এনএইচকে–এর সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, জাপান বিমান সংস্থার এ৩৫০ উড়োজাহাজের জানালা দিয়ে আগুন বের হচ্ছে এবং রানওয়েতেও আগুন জ্বলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজের ধোয়া ভর্তি কেবিনে যাত্রীরা চিৎকার করছেন।
এক যাত্রী কিয়োদো বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘অবতরণের পর মুহূর্তেই আমি কোনো কিছুকে আঘাত করার মতো বিকট শব্দ শুনতে পাই আর উড়োজাহাজটি ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। আমি জানালার বাইরে আগুনের ফুলকি দেখতে পাই আর সমগ্র কেবিন ধোয়া ও গ্যাসে ভরে যায়।’
জাপান বিমান সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, উত্তরের পার্বত্য দ্বীপ হোক্কাইদোর শিন চিতোস বিমানবন্দর থেকে তাদের একটি ফ্লাইট ছেড়ে যায়। অবতরণের পরপরই এটির সঙ্গে অন্য উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতি অনুসারে, তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করতে ও জনগণকে তথ্য দিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
এ ঘটনার পরই টোকিওর প্রধান দুই বিমানবন্দরের একটি, হানেদার সব রানওয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: