ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ ৩১ তম দিনে গড়িয়েছে। গাজায় নির্বিচারে ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এত কিছু হলেও এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বা গাজায় যুদ্ধবিরতি আহ্বান জানায়নি অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন সরকার।
এ নিয়ে ৬ নভেম্বর, সোমবার সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদল গ্রিনস পার্টির সিনেটেরদের তোপের মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সদস্যরা। এমনকি অধিবেশনের একপর্যায়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে সংসদ থেকে বেরিয়ে যায় বিরোধীরা।
সোমবার ওয়াকআউটের নেতৃত্ব দেন গ্রিনস পার্টির উপনেতা মেহরিন ফারুকি। সংসদ থেকে মেহরিন ফারুকি বেরিয়ে গেলে তার সঙ্গে সঙ্গে গ্রিনস পার্টির আরও ১০ সদস্যও বেরিয়ে যান।
ওয়াকআউটের আগে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ডন ফারেলের কাছে গাজায় মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে অস্ট্রেলিয়া কেন ভোটদানে বিরত ছিল, তা জানতে চান মেহরিন ফারুকি।
মেহরিন ফারুকির এমন প্রশ্নের জবাবে লেবার পার্টির এই মন্ত্রী জানান, প্রস্তাবটি অসম্পূর্ণ ছিল। কেননা এতে গত ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত হামাসের নাম নেওয়া হয়নি।
গত ২৭ অক্টোবর গাজায় মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জর্ডান প্রস্তাব পেশ করলে তা ১২০ দেশের ভোট পেয়ে পাস হয়। তবে এই প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল অস্ট্রেলিয়াসহ ৪৫ টি দেশ।
সংসদে দাঁড়িয়ে মেহরিন ফারুকি বলেন, ইসরায়েল গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করছে। এটা আপনারা শুধু দেখেই যাচ্ছেন। আপনারা ইসরায়েলের নিন্দা করছেন না। অবিলম্বে সেখানে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে অস্বীকার করছেন। আমরা এখানে আর বসে থাকতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, এভাবে এড়িয়ে গেলে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ হবে না। আজ আমরা দেশের জনগণের প্রতিবাদ সংসদে নিয়ে এসেছি। ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন।
সংসদ থেকে বেরিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্সে আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন মেহরিন ফারুকি। সেখানে তিনি বলেছেন, লাখ লাখ অস্ট্রেলীয় নাগরিকের মতো আমরা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানিতে স্তম্ভিত, আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। হামাসের হামলার জবাবে গাজায় টানা বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। অব্যাহত বোমাবর্ষণের মধ্যেই এবার সেখানে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি হামলায় মাত্র ৩০ দিনে গাজায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার মানুষ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: