ইউক্রেনের লাইব্রেরিগুলো থেকে গত নভেম্বরে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ বই সরিয়ে নিয়েছে কিয়েভ। বইগুলো সোভিয়েত যুগের। এর বেশির ভাগই রুশ ভাষায় লেখা। গতকাল সোমবার ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুক এসব কথা বলেছেন।
গতকাল ইউক্রেনের পার্লামেন্টের ওয়েবসাইট ভেরখোভনা রাদাতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুকের বক্তব্যটি উপস্থাপন করা হয়েছে। ইউক্রেনের মানবিক সহায়তা ও তথ্য নীতিবিষয়ক পার্লামেন্ট কমিটির উপপ্রধান ইয়েভহেনিয়া ক্রাভচুক বলেন, সরিয়ে নেওয়া ১ কোটি ৯০ লাখ বইয়ের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ বই রুশ ভাষায় লেখা। গ্রন্থাগারে সোভিয়েত যুগে ইউক্রেনীয় ভাষায় রচিত কিছু বইও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলায় সমর্থনকারী লেখকদের বইও সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে প্রত্যাহার করা বইগুলো কী করা হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার পর থেকে রুশ ভাষার বই ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করে কিয়েভ। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বন্ধন ছিন্ন করার লক্ষ্যে রুশ ভাষায় রচিত বইগুলোর বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিছু নীতিমালাও বাতিল করা হয়। কিয়েভ কর্তৃপক্ষ বলে আসছে এসব নীতিমালা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ইউক্রেনীয়দের পরিচয়কে চাপা দিয়ে রেখেছে।
ক্রাভচুক বলেন, আমাদের গ্রন্থাগারগুলোয় যে অনুপাতে রুশ ও ইউক্রেনীয় ভাষার বই ছিল তা খুবই দুঃখজনক। যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেনীয় ভাষায় লেখা বই কেনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ক্রাভচুক আরও বলেন, ইউক্রেনের গ্রন্থাগারে থাকা বইগুলোর প্রায় ৪৪ শতাংশই রুশ ভাষায় লেখা। বাকিগুলো ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত অন্য দেশগুলোর ভাষায় রচিত।
ইউক্রেনিয়ান হলো ইউক্রেনের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা। ২০১৯ সালে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজি এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটিতে সব সময় কিংবা বেশির ভাগ সময় ইউক্রেনিয়ান ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। আর সব সমই কিংবা বেশির ভাগ সময় রুশ ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ।
ইউক্রেনে রুশ ভাষার ব্যবহারের ওপর কড়াকড়ি ক্রমাগত জোরদার হলেও কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে এখন এ ভাষার ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। ইউক্রেনে ব্যবসায়িক ও অন্য প্রতিষ্ঠানে ইউক্রেনিয়ান ভাষা ব্যবহারের আইনি বাধ্যবাধকতা আছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: