ভূগর্ভস্থ শহর নুশাবাদ : ইরানের অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৪ মে ২০২৩ ১০:৩৮

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


বিশ্বের বুকে অন্যতম প্রাচীন ও রহস্যময় ভূগর্ভস্থ শহর নুশাবাদ। এটি ইরানের ইস্ফাহান প্রদেশের আরান-বিদগোল কাউন্টির কেন্দ্রীয় জেলায় অবস্থিত। তিন তলাবিশিষ্ট টানেল, চেম্বার, বায়ুনালী, সিঁড়ি এবং খালের সমন্বয়ে গঠিত শহর প্রাচীন স্থাপত্য ও প্রকৌশলের একটি বিস্ময়কর সৃষ্টি হিসেবে বিবেচিত।

প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরোনো শহরটি এক দশক আগেও সম্পূর্ণ অজানা ছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দা নিজের বাড়িতে কূপ খুঁড়তে গিয়ে একটি টানেলের সন্ধান পান। সেই সূত্র ধরেই বেরিয়ে আসে বিশাল ভূগর্ভস্থ শহরটি।

মাটির নিচের শহরটি তিন থেকে ১৮ মিটারের মতো গভীর। মানুষের তৈরি ভূগর্ভস্থ শহরটি সাসানি যুগে (২২৪ থেকে ৬৫১ সাল) নির্মাণ করা হয়। এটি ‘কুয়ি’ নামে পরিচিত।শহরটির বাসিন্দারা মাটির নিচে লুকানোর জন্য স্বতন্ত্র চেম্বার খনন করেন। মূলত বিদেশি আক্রমণকারীদের হাত থেকে নারী, শিশু ও বয়স্কদের বাঁচাতে চেম্বারগুলো তৈরি করা হয়।

ভূগর্ভস্থ কাঠামোতে প্রতিকূল অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতে ও অতর্কিত হামলার হাত থেকে বাঁচতে বেশ কিছু  অভিনব কায়দা ব্যবহার করেছে, যেমন বাঁকানো করিডোর এবং পাথরে ঢাকা ছদ্মবেশী গর্ত। সুড়ঙ্গগুলি, ১৩ শতকে মঙ্গোল আক্রমণের সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। ভূগর্ভস্থ চেম্বারগুলির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ ছিল, যার মধ্যে কয়েকটি শহরের বাড়ির সাথে সংযুক্ত করা।

পরবর্তীতে স্বতন্ত্র চেম্বারগুলোতে বায়ুনালী, পানির পাইপ, গুদাম ঘর ও টয়লেট নির্মাণ করা হয়। এভাবেই একটি টেকসই ভূগর্ভস্থ শহর গড়ে তোলা হয়। যেখানে প্রাচীন পারস্যবাসী যুদ্ধের সময় আশ্রয় নিতো। প্রতিটি পরিবারের এতে নিজ নিজ কক্ষ ছিল। এসব কক্ষের নিচ দিয়ে ছিল সুড়ঙ্গ।

ইরান প্রাচীন ট্রোগ্লোডিটিক স্থাপত্যটি সৃজনশীলতায় ভরা। উত্তর-পশ্চিম কান্দোভান গ্রামটি দেশের ট্রোগ্লোডিটিক স্থাপত্যের সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণগুলির মধ্যে একটি।

এছাড়াও নুশাবাদ ভূগর্ভস্থ শহরকে মরুভূমির গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা থেকে বাঁচতে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ১৯২০ সালে শহরটি পরিত্যক্ত হয়। বর্তমানে অন্যতম প্রধান আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য এটি। ২০০৬ সালে নুশাবাদ শহর ইরানের জাতীয় ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে

 

সূত্র : তেহরান টাইমস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: