কালপুরুষ নীহারিকায় কয়েক শত রহস্যজনক বস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব বস্তুর আকার অনেকটা গ্রহের মতো। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে এসব বস্তু দেখা গেছে। এ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন এক অধ্যায়।
সম্প্রতি আবিষ্কৃত অজানা এসব বস্তু এত ছোট যে সেগুলোকে নক্ষত্র বলা যায় না। আবার গ্রহের প্রচলিত সংজ্ঞার মধ্যেও পড়ে না। কারণ, নির্দিষ্ট একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে না এই বস্তুগুলো। এসব বস্তুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুপিটার মাস বাইনারি অবেজেক্ট’। সংক্ষেপে বলা হচ্ছে জাম্বোস।
কালপুরুষে গ্রহের মতো বস্তুর খোঁজ পাওয়ার এ ঘটনা বলছে, গ্রহ ও নক্ষত্রমণ্ডলী নিয়ে আমাদের মধ্যে বিদ্যমান ধ্যানধারণা ও তত্ত্ব ভ্রান্ত হতে পারে। কারণ, এতে বোঝা যাচ্ছে, কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতি গ্রহের মতো বস্তু গঠিত হওয়া সম্ভব নয়। এসব বস্তু আগে থেকেই সেখানে ছিল।
ইউরোপের ২২টি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক মার্ক ম্যাকুগ্রেন। তিনি বলছেন, প্রথমে ভূমিতে থাকা টেলিস্কোপের মাধ্যমে রহস্যজনক কিছু বস্তুর উপস্থিতির কথা জানা যায়। পরে তার খোঁজে গিয়ে আবিষ্কৃত হয় এসব বস্তু। বৃহদাকার, অতি উষ্ণ, গ্যাসীয় এসব বস্তুর গঠন দেখে সেগুলোকে গ্রহের মতো বলে মনে হয়। তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এর বায়ুমণ্ডলে বাষ্প ও মিথেন গ্যাসও রয়েছে। কিন্তু এগুলোকে সরাসরি গ্রহ বলা যাচ্ছে না। জাম্বোস নামের কারণ এর মধ্যে কয়েক ডজন জোড় অবস্থায় রয়েছে।
অধ্যাপক মার্ক ম্যাকুগ্রেন বলছেন, ‘কোনটা গ্রহ আর কোনটা গ্রহ নয়—এই বিতর্ক নিয়ে উপসংহারে যাওয়ার মতো সময় আমাদের কারোর নেই। কারণ, এটা এমন বিষয়, যার উপসংহার টানা যায় না।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সম্প্রতি আবিষ্কৃত রহস্যজনক এসব বস্তুর (জাম্বোস) বয়স হতে পারে প্রায় ১০ লাখ বছর। জ্যোতির্বিজ্ঞানের জায়গা থেকে বিবেচনা করতে গেলে অবশ্য এসব বস্তু শিশুর বয়সী। এর পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস, যাকে ‘নারকীয়’ বলছেন বিজ্ঞানীরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: