চীনের সেন্ট্রাল শানসি প্রদেশে ‘শর্টকাট’ রাস্তা বের করতে গিয়ে দেশটির মহাপ্রাচীর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে একদল নির্মাণশ্রমিকের বিরুদ্ধে। ৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের মহাপ্রাচীর ভেঙে ফেলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে এখন আরও অনুসন্ধান চলছে।
পুলিশের হাতে আটক দুজনের মধ্যে একজন ৩৮ বছর বয়সী পুরুষ, অন্যজন ৫৫ বছরের এক নারী নির্মাণশ্রমিক। যে এলাকায় মহাপ্রাচীরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই এলাকায়ই কাজ করছিলেন আটক শ্রমিকেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকেরা মহাপ্রাচীরটিতে একটি বড় ধরনের ফাঁক তৈরি করেছে যেন তাঁরা তাঁদের এক্সকাভেটর (খননকারী) যন্ত্রটি সহজে আনা-নেওয়া করতে পারেন। মূলত কাজে ভ্রমণ দূরত্ব কমাতেই রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটির ক্ষতি করেছেন তাঁরা।
জানা গেছে, চীনের মিং শাসনামলে তৈরি করা মহাপ্রাচীরের ৩২তম অংশটি শানসি প্রদেশের ইউজু কাউন্টি দিয়ে গেছে। ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটির নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি প্রাদেশিক পর্যায়ে নিশ্চিত করা হয়। গত ২৪ আগস্ট কর্মকর্তারা জানতে পেরেছিলেন, চীনের প্রাচীরে একটি বড় ধরনের ফাঁক তৈরি হয়েছে।
চীনের মহাপ্রাচীরকে ১৯৮৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেসকো। খ্রিষ্টপূর্ব ২২০ অব্দ থেকে মিং শাসনামলের ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই প্রাচীর বহুবার নির্মাণ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। চীনের মহাপ্রাচীরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
মহাপ্রাচীরের সুপরিচিত অংশগুলোতে সুন্দরভাবে নির্মিত প্রাচীন ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। তবে এই কাঠামোর অনেক অংশই ভেঙে পড়েছে, কিছু অংশ সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে গেছে।
বর্তমানে পর্যটকেরা এই প্রাচীরের যে অংশ দেখেন তার বেশির ভাগই মিং রাজবংশের সময় নির্মিত হয়েছিল।
কয়েক বছর ধরে প্রাচীরের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত বা ভেঙে ফেলা হয়েছে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে। ২০১৬ সালে বেইজিং টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মিং মহাপ্রাচীরের ৩০ শতাংশেরও বেশি সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে গেছে। আর এই প্রাচীরের মাত্র ৪ শতাংশ এখনো ভালোভাবে সংরক্ষিত আছে।
সূত্র : বিবিসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: