মৃত বাবার স্ত্রী সেজে ১০ বছর ধরে পেনশন তুলেছেন মেয়ে

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৪ আগস্ট ২০২৩ ১০:০২

অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে মৃত বাবার স্ত্রী সেজে ১০ বছর ধরে পেনশন তুলেছেন মোহসিনা পারভেজ নামের এই নারী : সংগৃহীত ছবি অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে মৃত বাবার স্ত্রী সেজে ১০ বছর ধরে পেনশন তুলেছেন মোহসিনা পারভেজ নামের এই নারী : সংগৃহীত ছবি


অভিনব এক প্রতারণায় মৃত বাবার স্ত্রী সেজে ১০ বছর ধরে পেনশন তুলেছেন এক নারী। ওই ব্যক্তির স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পেনশন তোলার জন্য নিজের মায়ের পরিচয়ের জায়গায় অভিযুক্ত নারী নিজের ছবি ব্যবহার করেছেন। আর এভাবে গত ১০ বছরে মৃত বাবার স্ত্রী সেজে পেনশন তুলে নিয়েছেন তিনি। তবে এই নারীর এমন অপকর্ম ফাঁস করে দিয়েছেন তার সাবেক স্বামী। পরে জালিয়াতির অভিযোগে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর জালিয়াতির এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের আলিগঞ্জ এলাকায়।

দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, অভিযুক্ত নারীর নাম মোহসিনা পারভেজ। আলিগড়ের বাসিন্দা ওয়াজাহাত উল্লাহ খানের মেয়ে তিনি। সরকারি চাকরি থেকে ওই ব্যক্তি ১৯৮৭ সালের ৩০ নভেম্বর অবসরে যান। ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি মারা যান তিনি। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক বছর আগে মারা যান স্ত্রী সাভিয়া বেগমও।

১৩ আগস্ট, সোমবার আদালত এই জালিয়াতির ঘটনায় মোহসিনা পারভেজকে গ্রেপ্তার ও পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাকে।

মামলার নথিতে বলা হয়েছে, ওয়াজাহাত উল্লাহ খানের মেয়ে মোহসিনা নিজেকে তার বাবার স্ত্রী হিসেবে দেখানোর জন্য ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করেছেন। ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে গত এক দশক ধরে মৃত বাবার স্ত্রী সেজে পেনশন তুলে নিয়েছেন তিনি।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, এখন পর্যন্ত ওই নারী ১২ লাখ রুপির বেশি পেনশন পেয়েছেন বলে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২০১৭ সালে ফারুক আলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মোহসিনা পারভেজ। বিয়ের পর থেকে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। যা এক পর্যায়ে বিচ্ছেদে রূপ নেয়।

কর্মকর্তারা বলেছেন, মোহসিনার বেআইনিভাবে পেনশন তুলে নেওয়ার বিষয়ে জানতেন তার স্বামী ফারুক। গত বছর স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের পর এই ঘটনা ফাঁস করে দেন তিনি।

আলিগঞ্জের সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, মোহসিনা পেনশন আবেদনে ‘চতুরতার সাথে তার মায়ের নাম এবং নিজের ছবি’ ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলা দিয়েছেন।

মোহসিনার ওই আবেদন সরকারি অফিসের একজন কেরানি ও একজন কনস্টেবল সত্যায়ন করেছিলেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সেটি জেলা রাজস্ব বিভাগের কাছে পাঠানো হয়।

জালিয়াতির এই ঘটনায় মোহসিনার বিরুদ্ধে আলিগঞ্জ থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, ওই নারীর আবেদন অনুমোদনকারী কর্মকর্তাদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অলোক কুমার বলেছেন, ‘তদন্তে অভিযুক্তের পেনশন আবেদনের যাচাইবাছাই ও অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ত্রুটি ধরা পড়েছে। অভিযুক্তের সাথে কোনও কর্মকর্তার যোগসাজশ পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: